সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শিল্পের দাম শিল্পী বোঝে। কিন্তু পেটের খিদে রক্তমাংসের মানুষকেই বুঝতে হয়। পেটের তাড়নাতেই তাই সেলুলয়েডের মায়া কাটিয়ে বাস্তবের কঠিন মাটিতে দাঁড়িয়ে বাজারে মাছ বিক্রি করছেন টলিপাড়ার জনপ্রিয় অভিনেতা অরিন্দম প্রামাণিক।
বাংলা ধারাবাহিকের অতি পরিচিত মুখ অরিন্দম। ‘সুবর্ণলতা’ থেকে ‘অগ্নিপরীক্ষা’, ‘রাশি’-সহ একাধিক মেগা সিরিয়ালে কাজ করেছেন। প্রশংসাও কুড়িয়েছে তাঁর অভিনয়। কিন্তু করোনা মহামারী (Corona Pandemic) এক ঝটকায় বদলে দিয়েছে জীবনের সেই চেনা ছন্দ। গত বছর থেকেই বারবার শুটিং বন্ধ হয়ে যাওয়া, সময়ে বেতন না মেলার মতো বহু ঘটনায় বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছেন অনেক কলাকুশলীই। কিন্তু রিল না ঘুরলে যে ডান হাতটি মুখে উঠবে না। তাই আর অপেক্ষা না করে অন্য পেশায় চলে গিয়েছেন অরিন্দম। আপাতত তিনি মাছবিক্রেতা।
[আরও পড়ুন: ‘হাল ছাড়ব না, লড়েই যাব’, কঠিন সময়ে পজিটিভ থাকার বার্তা দিলেন মিমি]
অভিনেতা বলছিলেন, ”বাবার অসুস্থতার জন্য সবজির ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। আর গত বছর তো লকডাউনের কারণে ইন্ডাস্ট্রিতে তালাই পড়ে গিয়েছিল। তখনই মেমারির বাড়িতে চলে আসি। ঠিক করি মাছ বিক্রি করব। কিন্তু রাস্তার ধারে বসে মাছ বিক্রি করাটা একেবারেই সহজ ছিল না। কিন্তু অন্য কোনও উপায়ও তো ছিল না। বাবা-মা ও স্ত্রী নিয়ে সংসার চালানোর একটা দায়িত্ব তো থেকেই যায়।” এরপরই যোগ করেন, প্রথমবার লকডাউন আনলক হওয়ার পর ফের শুটিং কাজ শুরু হয়েছিল। অভিনয়ের ডাকও এসেছিল তখন। কিন্তু অতিমারী আবহে ভরসা করে আর ফিরতে পারেননি। ততদিনে মাছের ব্যবসাটা অনেকটাই গুছিয়ে নিয়েছিলেন। তাই স্বপ্নের পেশাকে ছুটি দিয়েই মাছের ব্যবসা চালিয়ে গিয়েছেন। মেমারি স্টেশন সংলগ্ন বাজারেই এখন রোজ মাছ বিক্রি করেন অরিন্দম।
প্রসঙ্গত, এর আগে বহু সিনেমা, সিরিয়ালের পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করা শ্রীকান্ত মান্নাও করোনা কালে পেশা বদলে হয়েছিলেন মাছ বিক্রেতার। দানের প্রত্যাশায় না থেকে খেটে খাওয়া অভিনেতাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় শ্রদ্ধাও জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র (Sreelekha Mitra)। এবার সামনে এল অরিন্দমের রোজনামচা। অতিমারীতে আবহ যেন মানুষের ভালবাসার সবটুকু কেড়ে নিয়েছে। অরিন্দম-শ্রীকান্ত মান্নারাই তার জ্বলন্ত উদাহরণ।