সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আট বছর ধরে কবর খুঁড়েও পারিশ্রমিক মেলেনি। উলটে বেতন বৃদ্ধির কাগজপত্র আটকে আছে লালফিতের ফাঁসে। আত্মীয় পরিজনদের দয়া দাক্ষিণ্যেই কোনওরকমে দিন গুজরান হচ্ছে খননকর্মীদের। রেশন কার্ড না থাকায় সরকারি সহযোগিতাও দূরঅস্ত। এ হেন দূরাবস্থার জন্য বেঙ্গালুরু পুর-প্রশাসনকেই কাঠগড়ায় তুলেছে খননকর্মীদের সংগঠন রুদ্রভূমি।
[বিয়েতে খাপ পঞ্চায়েতের দৌরাত্ম্য পুরোপুরি বেআইনি: সুপ্রিম কোর্ট]
এই প্রসঙ্গে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সৌরি রাজা। তিনি জানিয়েছেন, ‘খননকর্মীদের বকেয়া পাওনা তাড়াতাড়ি মিটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল পুরনিগম। তবে এখনও পর্যন্ত সেই প্রতিশ্রুতি পূর্ণ হয়নি। খননকার্যের জন্য পুরনিগমের খাতায় ২০০ শ্রমিকের নাম নথিভুক্ত রয়েছে। আধিকারিকদের তরফে বলা হয়েছিল প্রত্যেক শ্রমিক ১০০০ টাকা করে মাসিক বেতন পাবে। কিন্তু ২০১০ থেকে একটা টাকাও আমরা পাইনি। যখনই আমরা টাকা চেয়েছি, তখনই কর্তৃপক্ষ নানা অজুহাত দেখিয়েছে। আমরা যেহেতু পড়াশোনা জানি না। তাই অনেককিছুই বুঝতে পারি না। দীর্ঘদিন বেতন না পেয়ে বিক্ষোভও দেখিয়েছি। শান্ত করতে বেতন বাড়িয়ে দেওয়ার নতুন গল্প শুনিয়েছে পুর-কর্তৃপক্ষরা। তবে আমরা এই ভেবে খুশি যে আমাদের বেতন বাড়িয়ে দেওয়ার কথা কর্তৃপক্ষ বলতে চেয়েছে। কাউন্সিলের অনুমতি পেলে ২০১৭-র অক্টোবরের মধ্যে বেতন সংক্রান্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। এমনটাই আমাদের জানানো হয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত আমরা কিছুই পেলাম না। দীর্ঘদিন ঘরের ছাউনি বদলাতে পারিনি। বর্ষা শুরু হলেই জলে ভাসে ঘর। যে কোনওদিন চাপা পড়ে মরতে পারি। আমাদের পকেটে মোবাইল ফোন থাকলেও বাড়িতে বাথরুম নেই। পুর-আধিকারিকরা বাড়ি তৈরির জন্য ঋণের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা কাগজপত্রেই রয়ে গিয়েছে।’
[রক্তাক্ত স্মৃতি অতীত, পূর্বপুরুষের টানে ফের মুম্বইয়ে পা রাখল মোশে]
দূর্দশার কথা শুনিয়েছেন উলসোর কবরখানার কর্মী নরেশ। বেশ কয়েক পুরুষ ধরে তাঁরা কবরখানা চত্বরেই আছেন। প্রথাগত শিক্ষাও নেই। স্বাভাবিকভাবেই কবরখানার পাঁচিলের বাইরের পৃথিবীটা কেমন তার কিছুই জানা নেই। এখন তাঁদের পরবর্তী প্রজন্ম পূর্বপুরুষের পেশা থেকে বেরোতে চাইছে। কিন্তু তাঁরা তা চান না। ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা শিখে কিছু করুক, এমন ইচ্ছে তো হয়। তবে একপাটি জুতো কেনার মতো সামর্থ্যও তাঁদের নেই।
এই প্রসঙ্গে পুর কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, খুব শিগগির খননকর্মীদের বকেয়া পাওনা মিটিয়ে দেওয়া হবে। তবে তার জন্য পুরনিগমের খাতায় নথিভুক্ত খননকর্মীরা নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ দিক। তারপরেও বিষয়টি নিয়ে আগ্রহ দেখায়নি খননকর্মীরা। তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
মেয়র সম্পত রাজ বলেন, খননকর্মীদের বেতনের বিষয় যারা দেখেন তাদের সঙ্গে কথা বলা হবে। বকেয়া পাওনার কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হবে। খননকর্মীদের বেতন মিটিয়ে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হচ্ছে।
The post ৮ বছর ধরে বিনা পারিশ্রমিকে কবর খুঁড়ে চলেছেন এঁরা, কেন জানেন? appeared first on Sangbad Pratidin.