সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কোনও পার্টি হোক বা গেট টুগেদার, বন্ধুবান্ধবদের আড্ডাই হোক বা পুজোর খানাপিনা- কোকাকোলা ছাড়া ভারতীয়দের রসনাতৃপ্তির বৃত্ত যেন সম্পূর্ণ হয় না! বিশেষজ্ঞরা বারবার নিষেধ করলেও বোতলবন্দি এই কালো পানীয় গলাধঃকরণ করতে কসুর রাখি না আমি-আপনি। পেটপুরে খাওয়া দাওয়ার পর এক বোতল কোকাকোলা যেন পেট ও মন- এই দুয়েই পরম তৃপ্তি এনে দেয়।
[অফিসেই কর্মীদের জন্য প্রেক্ষাগৃহ, বিয়ার ও জিমের ব্যবস্থা করেছেন এই বস!]
দীর্ঘ ১৩২ বছরেরও বেশি সময় ধরে কোকাকোলা কিন্তু তাদের পানীয়তে অ্যালকোহলকে ব্রাত্য রেখেছিল। কিন্তু আর নয়! বহুদিনের রীতিতে এবার ছেদ পড়ছে। বিক্রি শুরু হচ্ছে কোকাকোলার প্রথম অ্যালকোহলিক ড্রিংকের। সহজে বাংলায় বুঝিয়ে বললে, এই প্রথম বাজারে মদ বা মদজাতীয় পানীয় আনছে মার্কিন সংস্থাটি। কোকের সিনিয়র কর্তারা এই পণ্যকে ঐতিহাসিক বলে দাবি করেছেন। জাপানের বাজারে সর্বপ্রথম আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে কোকের এই অ্যালকোহলিক ড্রিংক। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, চাহিদা ও সরবরাহের নিয়ম মানতে গিয়েই কোকের এই পদক্ষেপ। জাপানের বাজারে এই মুহূর্তে স্ট্রং জিরো, হাইবল লেমন, স্ল্যাট-এর মতো ব্র্যান্ডের কড়া পানীয় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ‘চু-হি’-র মতো জাপানের প্রথাগত পানীয়র সেখানে দারুন চাহিদা। আর তাই রীতি ভেঙে এবার কড়া পানীয় এনে বাজারের সিংহভাগ দখলে রাখতে চাইছে কোক।
কী এই চু-হি?
চু-হি আদতে একরকম কড়া পানীয়। একে খাঁটি মদ বললে অত্যুক্তি হবে হয়তো কিন্তু ওই বিয়ার গোত্রে ফেলাই যায়। শোচু, সোডা জল ও নানারকম ফ্লেভার মিশিয়ে এটি তৈরি হয়। জাপানের যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে এটি দারুন জনপ্রিয়। সেখানকার বাজারে কয়েকশো স্বাদের চু-হি পাওয়া যায়। পানীয়র মোট বাজারের প্রায় ২৫ শতাংশ একাই এই পানীয়র দখলে। কোকের জাপানের প্রেসিডেন্ট জর্জ গারডুনো বলছেন, ‘কোর এরিয়া ছেড়ে আমরা বেরোতে চাইছি। আমরা আজীবনই নন-অ্যালকোহলিক ড্রিংক বানিয়েছি। কিন্তু এবার নিজেদের কমফর্ট জোন ছেড়ে বেরিয়ে বাজারের একটি নির্দিষ্ট অংশের দিকে ঝুঁকতে চাই।’ সাধারণত, বোতলবন্দি চু-হিতে ৩-৮% অ্যালকোহল থাকে। বিয়ারের সঙ্গে জাপানের বাজারে এর কড়া টক্কর চলে। কিরিন, আসাহি, টাকারা-র মতো জাপ সংস্থা দই, তুলসিপাতার মতো ফ্লেভারেরও চু-হি বিক্রি করে।
[নিয়মিত চা পান করলে বাড়ে বুদ্ধি ও একাগ্রতা]
তবে কোকের এই উদ্যোগ কিন্তু এবারই প্রথম নয়। পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৭০-এর শেষের দিকেও এবার ওয়াইন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়েছিল মার্কিন সংস্থাটি। ক্যালিফোর্নিয়ার কয়েকটি আঙুরক্ষেত ও নিউ ইয়র্কের বেশ কয়েকটি সংস্থা কিনে ওয়াইন বানাতে গিয়েছিল কোকাকোলা। ওয়াইনকে অবশ্য ঠিক মদের গোত্রে ফেলেন না অনেকেই। সে সময় ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স ফ্লাইটে বোতলবন্দি এই ওয়াইন বিক্রি হত। কিন্তু সেভাবে জনপ্রিয় না হওয়ায় পরে পণ্যটির উৎপাদন বন্ধ করে দেয় কোক। ২০১৭-তে ৫০০টিরও বেশি নতুন পণ্য বাজারে এনেছে কোকাকোলা। নয়া পণ্য উদ্ভাবনের উপর সবসময়ই জোর দেয় সংস্থা, দাবি কর্তাদের। গতবছরই প্রথমবার ব্রিটেনের বাজারে আইস টি, রেডি টু ড্রিংক কফি-র মতো পণ্য এনেছে কোক। বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণ মানুষ চিনি বর্জন করার দিকে ঝুঁকেছেন বলে চা, কফি বা মিষ্টিবিহীন পানীয়র দিকে ঝুঁকেছে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ঠান্ডা পানীয় প্রস্তুতকারক সংস্থাটি। আর তাই এবার তাদের নজরে একটু কড়া পানীয়।
[প্রথম থ্রি-ডি রোবটিক বিলবোর্ড লাগিয়ে তাক লাগাল Coca Cola]
The post ১৩২ বছরের ট্র্যাডিশন ভেঙে বাজারে ‘মদ’ আনছে Coca-Cola! appeared first on Sangbad Pratidin.