স্টাফ রিপোর্টার: এবার ভারত বন্ধের ডাক। ২৬ মার্চ কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের (Farm Laws) প্রতিবাদে ভারত বন্ধের ডাক দিলেন দেশের ‘অন্নদাতা’রা। শুধু বন্ধ নয়, নতুন কর্মসূচিতে আগামী ২৮ মার্চ কৃষি আইনের প্রতিলিপিকে হোলিকা দহন করে অশুভ শক্তির বিনাশ করার ডাক দিলেন দিল্লির বিভিন্ন সীমানায় আন্দোলনরত কৃষকরা।
কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের প্রতিবাদে (Farmers Protest) একশো দিন পেরিয়েছে কৃষকদের আন্দোলন। গত ২৬ নভেম্বর ‘দিল্লি চলো’র ডাক দিয়েছিলেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ‘অন্নদাতা’রা। অভিযোগ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনে থাকা দিল্লি পুলিশ তাঁদের রাজধানীতে ঢুকতে দেয়নি। প্রথম দু’দিন ব্যাপক হাঙ্গামার পর ২৮ নভেম্বর থেকে সিংঘু, টিকরি, গাজিপুর, চিল্লা-সহ বিভিন্ন সীমানায় অবস্থানে বসে আন্দোলন শুরু করেন কৃষকরা। সাধারণতন্ত্র দিবসে আন্দোলনের দু’মাস পূর্তিতে তাঁরা ট্রাক্টর র্যালিও করেন। যাকে কেন্দ্র করে হয় ব্যাপক হিংসা। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান কৃষকরা। ট্র্যাক্টর উলটে মৃত্যু হয় এক কৃষকের। লালকেল্লায় টাঙানো হয় শিখদের পবিত্র নিশান সাহিব (Nishan Sahib) পতাকা। যার জেরে তীব্র নিন্দার মুখে পড়তে হয় কৃষকদের। যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ক্ষতে প্রলেপ দিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি। তাদের স্পষ্ট বক্তব্য, সেদিনের অরাজকতা করেছে বহিরাগত দুষ্কৃতীরা। তাদের সঙ্গে কৃষকদের কোনও সম্পর্ক নেই।
[আরও পড়ুন: বিরুলিয়ায় সকাল থেকেই প্রবল উত্তেজনা, তৃণমূল-বিজেপি হাতাহাতি, ধস্তাধস্তিতে জড়াল পুলিশ]
২৬ জানুয়ারির পর এবার ২৬ মার্চ। নয়া কর্মসূচি নিল সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা (SKM)। ওইদিন ভারত বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে। এতদিন রেল রোকো-সহ অন্য সব কর্মসূচি একাই করেছিল কৃষক সংগঠন। এবারের ভারত বন্ধে বিভিন্ন শিল্প সংগঠন ও অন্য বিভিন্ন সংগঠনকে তাদের সঙ্গে থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে। ২৯ মার্চ হোলি। তার আগের দিন ‘হোলিকা দহন’ অনুষ্ঠানে পোড়ানো হবে ‘কালা কৃষি কানুনে’র প্রতিলিপি। উল্লেখ্য, এর আগেও লোহরির দিন একইভাবে পোড়ানো হয়েছে কৃষি আইনের প্রতিলিপি। এখানেই অবশ্য শেষ নয়। মার্চ মাসে অন্যান্য আরও কিছু কর্মসূচি নিয়ে প্রায় আস্ত একটি ক্যালেন্ডার তৈরি করা হয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, ১৫ মার্চের কর্পোরেট ও সরকার বিরোধী দিবস। এছাড়া ২৩ মার্চ শহিদ ভগৎ সিংয়ের বলিদান দিবসে দিল্লির বিভিন্ন সীমানায় জড়ো হবেন দেশের যুবকরা। কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দেবেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: ‘রাহুল-সোনিয়ারা নীরব দর্শক’, ভোটের মুখে দল ছাড়লেন কেরলের কংগ্রেস নেতা]
কৃষকরা যখন সরকারকে চাপে ফেলতে একের পর এক কর্মসূচি নিচ্ছে, তখন সীমানাগুলির রাস্তায় পেরেক পোঁতা, কাঁটাতার দিয়ে ব্যারিকেড করার কারণ জানাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে এদিন রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি জানান, ‘‘কোনও পথ খোঁড়া হয়নি। রাস্তায় পেরেক পোঁতা ও কাঁটাতার-সহ ব্যারিকেড করা হয়েছে ঠিক, তবে তা কৃষকদের ঘিরে রাখতে নয়। সাধারণতন্ত্র দিবসের মতো অনভিপ্রেত ঘটনা যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করার জন্যই ব্যারিকেড করা হয়েছে।’’