বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিশ্রমের অর্থ নয়ছয়ের অভিযোগে জেরবার যোগী আদিত্যনাথের (Yogi Adityanath) সরকার। করোনার (COVID) প্রথম ঢেউয়ে কেন্দ্র আচমকা লকডাউন (Lockdown) ঘোষণা করায় বিপদে পড়েন পরিযায়ী শ্রমিকরা। পরিবার নিয়ে ভিন রাজ্য থেকে বাড়ি ফিরতে পায়ে হেঁটে বা সাইকেল ও বাইকে বাড়ির দিকে রওনা হন শ্রমিকরা। কিন্তু সেখান থেকেও যোগী সরকার কোটি কোটি টাকার ফায়দা তুলেছে বলে অভিযোগ।
বাড়ি ফেরার পথে শ্রমিকদের আটকাতে উত্তরপ্রদেশ সীমান্তে নাকা তল্লাশি চালায় যোগীর পুলিশ। শ্রমিকদের জেলবন্দি করার পাশাপাশি তাঁদের শেষ সম্বলও ছিনিয়ে নেওয়া হয়। বিশেষ করে তাঁদের সঙ্গে থাকা সাইকেল ও বাইক। পরে ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে একটি করে টোকেন দেওয়া হয়। কিন্তু আজও তা ফেরত দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। বাজেয়াপ্ত হওয়া সাইকেল ও বাইক নিলামে তুলে কোটি কোটি টাকা উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh) সরকার রোজগার করে। কিন্তু সেই অর্থ কোথায় ব্যয় হয়েছে, তার কোনও সদুত্তর যোগী সরকার দিতে পারেনি। ফলে পরিযায়ী শ্রমিকদের কষ্টের উপার্জনের অর্থ যোগী সরকার নয়ছয় করেছে বলে তথ্যের অধিকার আইনে আবেদন করে জানতে পেরেছে একটি সংস্থা।
[আরও পড়ুন: দেশে ১৩ হাজার ছাড়াল করোনার দৈনিক সংক্রমণ, বেড়েই চলেছে অ্যাকটিভ কেস]
করোনার প্রথম ঢেউয়ে কেন্দ্রীয় সরকার আচমকা লকডাউন ঘোষণা করার পর হরিয়ানা, উত্তরাখণ্ড, হিমাচলপ্রদেশ, পাঞ্জাব, রাজস্থান, গুজরাত থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের সবচেয়ে বড় ভরসা ছিল সাইকেল ও বাইক। উত্তরপ্রদেশ সীমান্তে আসার পরেই যোগী সরকারের পুলিশ সেগুলি বাজেয়াপ্ত করে। বিনিময়ে শ্রমিকদের একটি করে টোকেনও দেওয়া হয়। সম্প্রতি, উত্তরপ্রদেশের শুধুমাত্র সাহারানপুর প্রশাসন সেই বাজেয়াপ্ত করা সাইকেল ও বাইক বিক্রি করে প্রায় ২১ লক্ষ টাকা আয় করে। রাজ্যের নিরিখে আয়ের পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা।
মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নির্দেশে হরিয়ানা, পাঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড এবং হিমাচল থেকে আসা শ্রমিকদের পিলখানির রাধা সৎসঙ্গ ভবনে কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়েছিল। প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক তাঁদের সাইকেল রেখে টোকেন নিয়েছিলেন। কিছু শ্রমিক সাইকেল ফিরিয়ে নিয়ে গেলেও সিংহভাগই অর্থের অভাবে জমা রাখা সাইকেল, বাইক ও স্কুটি ফেরত নিতে পারেননি। সাহারানপুরের জেলাশাসক অখিলেশ সিং জানান, রাধাস্বামী সৎসঙ্গ ভবনের আধিকারিকদের কাছ থেকে টোকেন নেওয়া অনেকেই সাইকেল, বাইক নিতে আসেনি। দূরত্বের কারণেই তাঁরা আগ্রহ দেখাননি। পড়ে থেকে সেগুলো নষ্ট হয়ে যেত। তাই নিলামে তোলা হয়েছে। নিলামে প্রাপ্ত অর্থ সরকারের অ্যাকাউন্টে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।
[আরও পড়ুন: অগ্নিপথ ঘিরে অগ্নিগর্ভ দেশ, পরিস্থিতি সামাল দিতে বড় ঘোষণা কেন্দ্রের]
গোটা রাজ্যের সীমান্তবর্তী জেলাগুলিকে বাজেয়াপ্ত যান-সহ অন্যান্য জিনিস বিক্রি করে দিতে নির্দেশ দিয়েছে যোগী সরকার। ফলে পরিযায়ী শ্রমিকদের থেকেও কোটি টাকার ফায়দা তুলতে পিছপা হয়নি উত্তরপ্রদেশ সরকার।