সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “জম্মু ও কাশ্মীরে নিজেদের হেলিকপ্টার ধ্বংস করা বড় ভুল ছিল।” শুক্রবার একথাই বললেন ভারতীয় বায়ুসেনা প্রধান রাকেশ কুমার সিং ভাদুরিয়া। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ের উপর আত্মঘাতী হামলা চালায় জইশ জঙ্গিরা। এর বদলা নিতে ২৬ ফেব্রুয়ারি পাক অধিকৃত বালাকাটে এয়ারস্ট্রাইক করে ভারত। আর তার পরেরদিন পাকিস্তানের মনে করে শ্রীনগর সংলগ্ন বুদগ্রামে একটি ভারতীয় হেলিকপ্টারে মিসাইল ছোঁড়া হয়। এর জেরে মৃত্যু হয় ৬ বায়ুসেনা আধিকারিক-সহ সাতজনের। এই ঘটনাকেই আজ অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বলে উল্লেখ করলেন বায়ুসেনা প্রধান।
[আরও পড়ুন: ফের রেপো রেট কমাল আরবিআই, কমছে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রাও]
তিনি বলেন, ‘আমাদের দিক থেকে ওইদিন খুব বড় ভুল হয়েছিল। গত সপ্তাহেই এই সংক্রান্ত তদন্ত শেষ হয়েছে। তাতে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে যে নিজেদের মিসাইলেই ধ্বংস হয়েছিল আমাদের চপার। ইতিমধ্যেই দোষীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাঁদের কড়া শাস্তি দিয়ে বাকিদের সামনে একটা জলন্ত উদাহরণ রাখা হবে। পাশাপাশি আগামিদিনে যাতে এই ঘটনা না ঘটে তার দিকেও কড়া নজর রাখা হবে।’
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শ্রীনগর এয়ারবেস থেকে ইজরায়েলে তৈরি ওই স্পাইডার সারফেস-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণ নিয়ে কোনও সন্দেহ ছিল না। কিন্তু, বায়ুসেনা এই ঘটনার দায় নিতে রাজি না হওয়ায় তদন্ত শেষ করতে সময় লাগছে। মিসাইল উৎক্ষেপণ থেকে হেলিকপ্টার ধ্বংসের ঘটনাটি ঘটেছে মাত্র ১২ সেকেন্ডের মধ্যে। তাই ওই হেলিকপ্টারে থাকা বায়ুসেনার কর্মীরা বিষয়টি বুঝেই উঠতে পারেননি। আসলে পুলওয়ামা পরবর্তী পরিস্থিতিতে ভারতের মিসাইল উৎক্ষেপণের সিদ্ধান্তের ফলেই এই ঘটনা ঘটেছে। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বালাকোটে এয়ারস্ট্রাইক করে ভারতীয় বায়ুসেনা। এরপরই ২৭ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে জম্মু ও কাশ্মীরে প্রবেশ করে পাকিস্তানের প্রায় ২৪টি যুদ্ধবিমান। এর মধ্যে আমেরিকা থেকে কেনা এফ-১৬ বিমানও ছিল।
[আরও পড়ুন:নিরাপত্তা রক্ষীদের তৎপরতায় বানচাল নাশকতার ছক, কাশ্মীরে ধৃত ৪ হিজবুল জঙ্গি]
খবর পেয়েই তাদের তাড়া করে ভারতীয় বায়ুসেনার আটটি বিমান। পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী তরফে কাশ্মীরে সারফেস-টু-এয়ার মিসাইলও রেডি রাখা হয়েছিল। আচমকা শ্রীনগর বিমানবন্দরে মাটির অনেক কাছাকাছিতে একটি হেলিকপ্টার উড়তে দেখে তারা। তারপরই মিসাইলটি ছোঁড়া হয়। সেসময়ে ওখানে যে সিনিয়র আধিকারিক টার্মিনাল উইপনস ডিরেক্টরের ভূমিকায় ছিলেন তিনিই সম্ভবত এই মিসাইল ছোঁড়ার নির্দেশটি দিয়েছিলেন। হেলিকপ্টারটি শত্রুপক্ষের কিনা তা যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলেই এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাটি ঘটেছে বলেই তখন জানানো হয়েছিল। তবে আজ নিজেদের ভুলের কথা স্বীকার করে নিলেন বায়ুসেনা প্রধান।
The post ‘নিজেদের হেলিকপ্টারে মিসাইল ছোঁড়া বড় ভুল ছিল’, বললেন বায়ুসেনা প্রধান appeared first on Sangbad Pratidin.