সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিজেপিকে ঝাঁজরা করে দেব”, নিজ ভূমে ফিরেই হুঁশিয়ারি বিমল গুরুংয়ের। প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই প্রতিটি বিবৃতিতেই বিজেপিকে বিঁধেছেন গুরুং (Bimal Gurung)। রবিবারও দার্জিলিংয়ের চকবাজারের মোটরস্ট্যান্ড এলাকায় আয়োজিত জনসভাতেও তাঁর নিশানা ছিল বিজেপির দিকেই। অমিত শাহ (Amit Shah) থেকে কৈলাস বিজয়বর্গীয়, তাঁর তোপ থেকে রেহাই পাননি কেউই। পাশাপাশি এদিন সভা থেকে পাহাড়ের তিনটি বিধানসভা আসনে তৃণমূলকে বিপুল ভোটে জয়ী করার প্রতিশ্রুতিও দেন বিমল।
রবিবার শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং যাওয়ার পথে পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে গুরুংকে স্বাগত জানান অনুগামীরা। সুকনায় একদফা সংবর্ধনা জ্ঞাপন করার পর গারিধুরা, কার্শিয়াং, ঘুম, সোনাদা, টুং, জোরবাংলো এলাকায় তাঁকে দফায় দফায় গাড়ি থামিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। দার্জিলিংয়ের মোটর স্ট্যান্ড এলাকায়, যেখানে জনসভার মঞ্চ করা হয়েছিল সেখানে পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকার মানুষ ভোর ছ’টা থেকে জমায়েত করতে শুরু করে। জনসভার আনুষ্ঠানিক সূচি ঘোষণা করা ছিল সকাল দশটায়। তার অনেক আগে থেকেই দীর্ঘদিন পর তাঁদের নেতাকে চাক্ষুষ করতে হাজির হয়েছিলেন দার্জিলিং সহ পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষ।
[আরও পড়ুন: ‘অনেকেই আছেন’, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী নিয়ে ‘রহস্য’ জিইয়ে রাখলেন অমিত শাহ]
এদিন জনসভা থেকে বিমল তৃণমূলের পক্ষে ৪৯ টি আসন জেতার প্রতিশ্রুতি দেন। এদিন তিনি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগের খোলা জবাব দেন। জনশ্রুতি, তাঁর নেপালসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় হোটেল ক্যাসিনো রয়েছে। তিনি বলেন, “আমার ছেলে তিন বছর আমার সঙ্গে অজ্ঞাতবাসে ছিলেন। আমাকে জিজ্ঞাসা করত, তোমার এত কিছু আছে শুনি। সত্যিই যদি তোমার সম্পত্তি থেকে থাকে তাহলে সেখানে আমরা যেতে পারি। আমি কিছু বলতে পারিনি।” পাশাপাশি বিনয় তামাং অনিত থাপাদের খোলা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন, ক্ষমতা থাকলে মিথ্যে কথা না বলে সতেরো আঠারোটা আসন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) জিতিয়ে দেখানোর। জিটিএ যত কাজ হয়েছে তার মধ্যে দুর্নীতি হয়েছে বলে ফের একবার অভিযোগ তুলে প্রতিটি কাজের ক্ষেত্রে আরটিআই করবেন বলে হুমকিও দেন। এমনকী নাম না করে বিমল গুরুং বলেন, “একসময় যারা স্কুল থেকে ল্যাপটপ চুরি করত তাঁরা এখন জিটিএ চালাচ্ছে।” প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তিনি যখন সব জানতেন, তাহলে এতদিন একসঙ্গে থাকার সময় কেন তা নিয়ে মুখ খোলেননি? যদিও এসব এদিন ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল। এদিন সভার পর তিনি পাতলেবাসের বাড়িতে ফেরেন গুরুং।
এদিন বিমলের সঙ্গে একই মঞ্চে ছিলেন কয়েকদিন আগেই পাহাড়ে ফেরা রোশন গিরিও। বিমল পাহাড়ে ফেরাতে অনেকেই আবার সিঁদুরে মেঘ দেখছেন। যদিও বিনয়পন্থীরা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, যে তাঁরা কোনওরকম অশান্তিতে যাবেন না। তবে তাঁরা একেবারেই স্থির হয়ে বসে থাকবেন না তার প্রমাণও মিলেছে, ২৬ ডিসেম্বর পালটা পরিবর্তন যাত্রার ডাক দিয়েছেন বিনয় তামাং। উদ্দেশ্য একটাই, কার পক্ষে বেশি সৈনিক রয়েছে তা জানান দেওয়া। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিনয় পন্থীদের সভাপতি বিনয় তামাং বলেন, মানুষ কাকে বিশ্বাস করে কার সঙ্গে কত সমর্থন আছে তা দুই একদিনের মধ্যেই পরিষ্কার হয়ে যাবে। বাকি কথার অবশ্য তিনি জবাব দিতে চাননি।