রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: জনসংযোগ বাড়াতে বিজেপির নজর এবার কলকাতায়। গত লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ১৮টি আসন দখলে এলেও, কলকাতার দু’টি আসনেই পরাজয় হয়েছে। শুধু তাই নয়, দলের সদস্য সংগ্রহ অভিযানেও কলকাতায় টার্গেট পূরণ হয়নি। আগামীদিনে কলকাতা পুরভোট রয়েছে। তারপর ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচন। সেকথা মাথায় রেখেই সদস্য সংগ্রহ অভিযানকে সামনে রেখে কলকাতায় সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে নয়া কৌশল নিয়েছে বিজেপি। বিরোধী মনোভাবাপন্ন পরিবারের কাছেও দলের সদস্য হওয়ার আবেদন নিয়ে পৌঁছে যেতে চাইছে তারা। শাসকদলের ভোটার বলে পরিচিত এরকম বাসিন্দাদের বাড়িতে যাওয়ার পাশাপাশি বামপন্থী পরিবারের কাছে গিয়েও মোদি সরকারের প্রচার ও দলের সদস্য হওয়ার আবেদন জানাবেন বিজেপি নেতারা।
[আরও পড়ুন: ২ বছর পর ফের রাজ্যে ছাত্রভোট, ঘোষণা শিক্ষামন্ত্রীর]
কলকাতায় দলের সদস্য সংগ্রহ অভিযানে যে দুর্বলতা রয়েছে তা স্বীকার করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মহানগরীতে সদস্য সংগ্রহের টার্গেট কেন পূরণ হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। অথচ গত লোকসভা নির্বাচনে দক্ষিণ ও উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে পরাজয় হলেও পুর এলাকার একাধিক ওয়ার্ডে লিড রয়েছে বিজেপির। এক রাজ্য নেতার কথায়, উত্তর কলকাতার ৬০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২০টি ওয়ার্ডে এগিয়ে রয়েছে পদ্মফুল। দক্ষিণ কলকাতাতেও ওয়ার্ডভিত্তিক ভাল ভোট পেয়েছে দল। তা সত্ত্বেও কলকাতায় সাংগঠনিক দুর্বলতা, সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়াটা ভাবাচ্ছে বিজেপি নেতৃত্বকে। কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে বিজেপির উত্তর কলকাতা জেলা কমিটির অধীনে রয়েছে ৬০টি ওয়ার্ড। উত্তরে সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ১ লক্ষ ২০ হাজার নেওয়া হলেও, এখনও পর্যন্ত ৫২ হাজার সদস্য হয়েছে। জানালেন জেলার সভাপতি দীনেশ পান্ডে।
দক্ষিণ কলকাতা জেলা কমিটির সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লক্ষ। সেখানে এখনও পর্যন্ত সদস্য হয়েছে ৪৫ হাজার। জানালেন জেলা পার্টির সহ-সভাপতি নীতিন প্যাটেল। দক্ষিণ শহরতলি জেলা কমিটির মধ্যে কলকাতা পুরসভার ৪৫টি ওয়ার্ড রয়েছে। এপ্রসঙ্গে দক্ষিণ শহরতলি জেলা বিজেপির সভাপতি সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, ৩ লক্ষ সদস্য সংগ্রহের টার্গেট নেওয়া হয়েছে। ১ লক্ষ ৪৫ হাজার সদস্য করা সম্ভব হয়েছে।
[আরও পড়ুন:ফের কলকাতায় স্পায়ের আড়ালে ফাঁস মধুচক্র, গ্রেপ্তার ৬৫ বছরের খদ্দের-সহ ৭]
রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘কলকাতায় সদস্য সংগ্রহে আমরা বিশেষ ড্রাইভ দিচ্ছি। প্রচার ক্যাম্প হবে। প্রতিট বাড়ি বাড়ি যাওয়া হবে।’ দলীয় সূত্রে খবর, সদস্য সংগ্রহ করা এবং মোদি সরকারের সাফল্যকে বাড়ি বাড়ি তুলে ধরে কলকাতায় জনসমর্থন আরও বাড়াতে চাইছে গেরুয়া শিবির। সেই মতো বুথ ভাগ করে নেতা-কর্মীরা মাঠে নেমে পড়তে চলেছেন কালীপুজোর পরই।
এদিকে, বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে দেখা করেন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র তথা বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত। সব্যসাচীর বক্তব্য, সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। বিজয়ার পর নতুন রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। রাজ্যপাল অত্যন্ত ভাল মানুষ। রাজ্যের সৌভাগ্য এরকম একজন মানুষ রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন।
The post দুর্বলতা কাটিয়ে সদস্য বাড়ানোই লক্ষ্য, কলকাতায় বাড়ি বাড়ি প্রচার করবে বিজেপি appeared first on Sangbad Pratidin.