গোবিন্দ রায়: শাসকদলের ১৯ জন নেতা-মন্ত্রীর সম্পত্তি বৃদ্ধি মামলাতে আগেই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটকে পক্ষভূক্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। এবার বিরোধী শিবির বিজেপি, কংগ্রেস এবং বামেদের ৩০ নেতারও নাম উঠে এল। যাদের বিরুদ্ধে ক্রমাগত সম্পত্তি বৃদ্ধির অভিযোগ রয়েছে। এনিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court) দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলাতে ইডিকে পক্ষভুক্ত করার নির্দেশ দিল আদালত।
৩০ জন বিরোধী নেতার মধ্যে নাম রয়েছে— সিপিআইএময়ের সূর্যকান্ত মিশ্র, অশোক ভট্টাচার্য, ধীরেন বাগদি এবং কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। কংগ্রেসের অধীর রঞ্জন চৌধুরী, আবু হেনা, মোহিত সেনগুপ্ত, নেপাল মাহাতো, মইনুল হক, সাবিনা ইয়াসমিন, সমর মুখোপাধ্যায়, শাওনি সিংহ রায় এবং শেখ সফিউজ্জামান। পাশাপাশি, তালিকায় বামফ্রন্টের চন্দন সাহা, রামচন্দ্র ডোম, দেবেশ দাস, বংশ গোপাল চৌধুরী, বাসুদেব খান, বাসুদেব মেটে, ধীরেন্দ্রনাথ মাহাতো, আনিসুর রহমান সরকার, আবুল হাসনাত, গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়, খগেন মুর্মু, দেবাশিস বসু এবং অসিতকুমার মালিকের নাম রয়েছে। নাম রয়েছে বিজেপির রুপারানি মণ্ডল, তরুণকান্তি ঘোষ, সুধীর কুমার পান্ডে এবং ফনিভূষণ মাহাতোর।
উল্লেখ্য, শাসক দলের ১৯ জন নেতা-মন্ত্রী এবং ৩০ জন বিরোধী নেতাদের অস্বাভাবিক সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে ২০১৭ সালে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলার শুনানিতে ইডিকে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
[আরও পড়ুন: বিকিনিতে ছবি পোস্টের জের! ৯৯ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নারাজ অধ্যাপিকা, দ্বারস্থ হাই কোর্টের]
এদিন বিরোধী নেতাদের নামের তালিকা নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূলও। বিরোধীদের উদ্দেশে তাদের তোপ, তৃণমূলের বিরুদ্ধে একতরফা প্রচার চালাচ্ছিল বিরোধীরা। যদিও তৃণমূলকে এ নিয়ে পালটা দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তাঁর সাফ কথা, “এ নিয়ে সিবিআই, ইডি, সিআইডি যেই ডাকুক অধীর চৌধুরী হাসপাতালে শুয়ে থাকবে না। আয়করের সমস্ত হিসেব দেব।” একই সুর শোনা গিয়েছে শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র তথা বাম নেতা অশোক ভট্টাচার্যের গলাতেও। বললেন, “তৃণমূল কী বলল তাতে কিছু আসে যায় না। সবাই জানে আমার কী আছে, কোথায় থাকি। আদালত চাইলে তা জানিয়ে দেব।” তোপ দেগেছেন কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ও। তাঁর কথায়, যা বলার আদালত জানতে চাইলে জবাব দেব। তৃণমূল তো চোরের দল। ওদের কথার জবাব দেব না।”
প্রসঙ্গত, বিপ্লব কুমার চৌধুরী ও অনিন্দ্য সুন্দর দাস নামে দুই ব্যক্তির দায়ের করা মামলার মূল বিষয় ছিল, ২০১১ সাল থেকে শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তির হিসেবনিকেশ করে দেখা গিয়েছে, একেকজনের সম্পত্তির (Assets) পরিমাণ বেড়েছে হাজার গুণ পর্যন্ত। জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচনী হলফনামায় সম্পত্তির যে পরিমাণ দেখানো হয়েছিল, পরবর্তী ৫ বছরের তা প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। কীভাবে এই বৃদ্ধি? এই প্রশ্ন তুলে ২০১৭ সালে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। সেই আবেদনে নাম রয়েছে ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র, অমিত মিত্র, অর্জুন সিং, ব্রাত্য বসু-সহ রাজ্যের শাসকদলের ১৯ হেভিওয়েটের।