সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এ যেন সর্ষের মধ্যেই ভূত! যে বিজেপির আমলে এ দেশে তিন তালাক (Triple Talaq) অসংবিধানিক বলে ঘোষিত হয়েছে, সেই গেরুয়া শিবিরের এক জনপ্রতিনিধি তাঁর স্ত্রীকে তিন তালাক দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হলেন। ঘটনাটি ঘটেছে খাস মোদির রাজ্য গুজরাটে। অভিযোগ, মেহসানার বিজেপি কাউন্সিলর তাঁর স্ত্রীর উপর মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার করেছেন। এমনকী, একাধিকবার তিন তালাকও দিয়েছেন। তাঁর স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার হয়েছেন ওই কাউন্সিলর।
গুজরাটের (Gujarat) মেহসানা পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সেলিম নূর মহম্মদ ভোরা। পেশায় আইনজীবী। আহমেদাবাদের নিম্ন আদালতে নিয়মিত ওকালতি করেন তিনি। ২২ বছর আগে সেলিমের সঙ্গে বিয়ে হয় সিদিক্কিবানের। তাঁদের দুই সন্তানও রয়েছে। মেয়ের বয়স ২১ বছর। ছেলে ছ’বছর আগে মারা গিয়েছে। দীর্ঘ দু’দশকের বিবাহিত জীবন কাটিয়ে গত এপ্রিলে স্ত্রীকে তিন তালাক দেন সেলিম। এমনই অভিযোগ সিদিক্কিবানের। এরপর জুলাই মাসেও একইভাবে তিন তালাক দেন তিনি। এমনকী, সেই তিন তালাকের অডিও রেকর্ড করে এবং চিঠি আকারে সে কথা জানিয়ে আত্মীয়স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে সেলিম। এমনকী, শ্বশুরবাড়িতে তাঁর উপর মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার করা হত বলে দাবি সিদ্দিকিবানের। এনিয়ে একাধিকবার পুলিশে অভিযোগও জানিয়েছিলেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি বলেই দাবি সেলিমের স্ত্রীয়ের।
[আরও পড়ুন: হিজাববিরোধীদের পাশে দাঁড়ানোর শাস্তি! ইরানে গ্রেপ্তার অস্কারজয়ী সিনেমার অভিনেত্রী]
সিদ্দিকিবান আরও দাবি করেছেন, বিয়ের পর থেকে নানা অছিলায় তাঁর ভাইয়ের থেকে প্রচুর টাকা আত্মসাত করেছেন সেলিম। তিনি আরও জানান, বর্তমানে নিজের অল্পবয়সি সেক্রেটারি রেশমাবেন চৌহানের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়েছেন সেলিম। রেশমিবেন ফোনে সিদ্দিকিবানকে একাধিকবার হুমকি দিয়েছে বলেও খবর। বলা হয়েছিল, সেলমিকে ডির্ভোস না দিলে মিথ্য়া মামলায় ফাঁসিয়ে সিদ্দিকিবানকে জেলে পাঠানো হবে। পুলিশকে একথা জানিয়েছেন নির্যাতিতা নিজেই। অবশেষে অভিযুক্ত সেলিমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২২ অগস্ট তিন বার ‘তালাক’ শব্দে বিবাহ বিচ্ছেদ রীতিকে অসংবিধানিক ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ। স্বামী পরিত্যক্তা পাঁচ মুসলিম মহিলার করা আবেদনের ভিত্তিতে এই রায় দেয় শীর্ষ আদালত।