শুভঙ্কর বসু: হাওড়া এবং কলকাতার পুরভোট (KMC) নিয়ে এবার কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করল বিজেপি। তাঁদের বক্তব্য, শুধু হাওড়া এবং কলকাতা নয়, রাজ্যের বাকি পুরসভাগুলিতেও নির্বাচন করাতে হবে একই দিনে।
বস্তুত, কলকাতা পুরনিগম-সহ রাজ্যের ১১২টি পুরসভায় ২০২০ সাল থেকে নির্বাচন বকেয়া পড়ে রয়েছে। করোনার জেরে ২০২০ সালে এই নির্বাচনগুলি করানো যায়নি। তবে, বিধানসভা ভোট (Assembly Elections) এবং রাজ্যের ৭ কেন্দ্রের উপ নির্বাচন মিটতেই পুরভোট করাতে উদ্যোগী হয়ে উঠেছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই মোটামুটি ঠিক হয়ে গিয়েছে আগামী ১৯ ডিসেম্বর কলকাতা (KMC) ও হাওড়ায় (৫০ আসনে) পুরভোট হবে। রাজ্য সরকারের তরফে নির্বাচন কমিশনকে ১৯ ডিসেম্বর এই দুই পুরসভায় ভোট করানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সূত্রের খবর, সেই প্রস্তাবে সম্মতি দিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রকে চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছে। কমিশন সূত্রের খবর, বকেয়া পুরনির্বাচন দু’টি বা তিনটি ধাপে সম্পূর্ণ করতে চাইছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। যার প্রথম ধাপে ভোট হবে হাওড়া এবং কলকাতায়। পরবর্তী ধাপে রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তে ভোট হতে পারে।
[আরও পড়ুন: ১৯ ডিসেম্বর কলকাতা-হাওড়ায় পুরভোট, রাজ্যের প্রস্তাবেই সায় নির্বাচন কমিশনের]
এখানেই আপত্তি বিজেপির। তাঁদের বক্তব্য, ৬ মাসের বেশি সময় ধরে সব পুরসভাতেই নির্বাচন বকেয়া। তাহলে শুধু হাওড়া ও কলকাতায় নির্বাচন কেন? ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনে গিয়ে বিজেপি দাবি জানিয়ে এসেছে, সব পুরসভায় একসঙ্গে ভোট করাতে হবে। কমিশন সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি। ইতিমধ্যেই হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। সম্ভবত আগামী বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি।
[আরও পড়ুন: বিধানসভায় শপথ নতুন ৪ বিধায়কের, বিজেপির অনুপস্থিতিতে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী]
বিজেপি নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, এই নির্বাচন সরকার প্রদত্ত নির্বাচন। শেষবার ২০১১ সালে নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছিল কলকাতা পুরসভায়। তারপর আর পুরসভায় সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারে বক্তব্য, তৃণমূল এই দুই পুরসভায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গুন্ডাবাহিনী এনে কাজে লাগাতে চাইছে। তাই আলাদা করে এই দুই কেন্দ্রে নির্বাচন করাচ্ছে রাজ্য সরকার। তিনি আগেই জানিয়েছেন, “বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই রাজ্যের পুরভোট আটকে আছে। এতদিন রাজ্য সরকারের ভোট করানোর ইচ্ছাই ছিল না। আমরা বারবার ভোট করানোর দাবি জানিয়েছি। কিন্তু রাজ্য সরকারের সম্ভবত এটাই পরিকল্পনা ছিল। বিধানসভা (West Bengal Assembly Election) ভোটের পর জেলায় জেলায় সন্ত্রাস করে মানুষের মনে ভয় ধরিয়ে পুরসভাগুলি দখল করতে চাইছে ওরা।”