রুপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বঙ্গের বিধানসভা ভোটে বিজেপির পরাজয়ের পর থেকেই তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় দলের রাজ্যনেতাদের মুণ্ডুপাত করে চলেছেন। কখনও তাঁর নিশানায় থাকেন দিলীপ ঘোষ, আবার কখনও কৈলাস বিজয়বর্গীয়। কখনও কখনও তাঁর আক্রমণের ঝাঁজ এতটাই তীব্র, যে সামাল দিতে রীতিমতো বিপাকে পড়তে হয় দলের রাজ্য নেতাদের। সেই তথাগত রায়কে (Tathagata Roy) এবার পালটা দিলেন বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথা অধুনা দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর সাফ কথা, দলীয় কর্মীদের আচরণে যদি তথাগতর খারাপ লেগে থাকে তাহলে তিনি দল ছেড়ে দিতে পারেন।
শনিবার সল্টলেকে মর্নিং ওয়াকে গিয়ে তথাগত সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে দিলীপবাবু সাফ জানিয়ে দেন, তথাগত দলে থেকে দলেরই ক্ষতি করছেন। কোনওদিনই তিনি দলের জন্য কিছু করেননি। বরং দল তাঁকে অনেক কিছু দিয়েছে। সদ্যই একাধিক টুইটে মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল বুঝিয়েছেন, দলের বর্তমান রাজ্য নেতৃত্বের দুর্দশা দেখে তিনি লজ্জিত। এর জবাবে দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) সাফ কথা,”লজ্জা লাগলে দল ছেড়ে চলে যান।” বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি স্পষ্টই বলছেন, দলে থেকে দলের ক্ষতি করার থেকে ছেড়ে দেওয়া ভাল।
[আরও পড়ুন: রাজীবের দলবদলে শিক্ষা! দল ছাড়ার প্রবণতা রয়েছে এমন কাউকে বড় পদ দেবে না বিজেপি]
প্রসঙ্গত, রাজ্য বিধানসভায় ভরাডুবির পর তথাগত রায় মূল যে দু’জনকে টার্গেট করেছেন, তাঁরা হলেন তথাগত রায় এবং কৈলাস বিজয়বর্গীয় (Kailash Vijayvargiya)। একাধিকবার দিলীপবাবুর ভাষাবোধ এবং যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে শোনা গিয়েছে তথাগতকে। কৈলাসের ক্ষেত্রে তাঁর আক্রমণের ঝাঁজ আরও বেশি। রীতিমতো অশালীনতার সীমাও ছাড়িয়ে গিয়েছে একাধিকবার। যা অস্বস্তি বাড়িয়েই চলেছে বঙ্গ বিজেপির। বলা ভাল, তথাগত এখন দিলীপ-সুকান্তদের গলার কাঁটার মতো আটকে আছেন। অতএব, দিলীপ ঘোষ স্পষ্টতই সেই কাঁটা সরিয়ে ফেলতে তথাগতকে দল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন।
[আরও পড়ুন: ছ’মাসে কী এমন হল! বঙ্গ বিজেপির হাল দেখে হতভম্ব কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব]
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, দিলীপ ঘোষের অনেক আগে থেকেই বিজেপির সঙ্গে যুক্ত তথাগত। মেঘালয়ের বিদায়ী রাজ্যপাল ২০০২-০৬ পর্যন্ত বঙ্গ বিজেপির (BJP) সভাপতি ছিলেন। তারপর প্রায় ৯ বছর বিজেপির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। দলের প্রতি আনুগত্যের পুরস্কার স্বরূপই তাঁকে দেওয়া হয় মেঘালয়ের রাজ্যপালের পদ। রাজ্যপাল পদে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ফের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন তিনি।