সম্যক খান, মেদিনীপুর: বিজেপিতে ক্রমশই জোরাল হচ্ছে মতুয়া অস্বস্তি। পদ্ম শিবিরের ক্ষুব্ধ তিন বিজেপি বিধায়কের সঙ্গে ইতিমধ্যেই ‘গোপন’ বৈঠক সেরেছেন সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। আবার তার আগে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপও ত্যাগ করেছেন তিনি। এই অসন্তোষ নিয়ে গেরুয়া শিবির যে একেবারে উদাসীন তা নয়। জে পি নাড্ডার সঙ্গে কথা হয়েছে শান্তনু ঠাকুরের। এবার এই ‘গোপন’ বৈঠক নিয়ে মুখ খুললেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরে একাধিক কর্মসূচি রয়েছে দিলীপ ঘোষের। এদিন সকালে অশোকনগরে চা চক্রে যোগ দেন। ঠাকুর বাড়িতে ‘গোপন’ বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মিটিং হতেই পারে। কেউ কারওর সঙ্গে দেখা করতেই পারেন। আমাদের মতো তো সকলে রাস্তার উপরে বসে মিটিং করেন না। চা খাওয়ার জন্য বাড়িতে আসতেই পারেন। ডাকতেই পারেন।” ‘গোপন’ বৈঠকে ঠিক কী আলোচনা হল, সে বিষয়ে যদিও কিছুই জানা নেই বলেই দাবি তাঁর। এ প্রসঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি বলেন, “আমাকে তো ডাকেনি। কেন বসেছিল, কী কথা হয়েছিল, আমি তো বলতে পারব না। ওঁদের জিজ্ঞাসা করুন না। এসেছিলেন। ঠান্ডার সময় চা খেয়েছেন। গল্প হয়েছে। কথা হয়েছে।” একইসঙ্গে শান্তনু ঠাকুরকে দরাজ সার্টিফিকেট দেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “উনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। ভাল কাজ করছেন।”
[আরও পড়ুন: ছিঃ! মৃত্যুর পরও থামেনি ধর্ষণ! রাজস্থানের আদিবাসী কিশোরীর পরিণতিতে চাঞ্চল্য]
গত বছরের শেষের দিকে বিভিন্ন সাংগঠনিক জেলার নতুন সভাপতির নামের তালিকা প্রকাশ করে বিজেপি। আর সেই তালিকা প্রকাশের পর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ (WhatsApp Group) থেকে নিজেদের সরিয়ে নেন বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার পাঁচ বিধায়ক (MLA)। তাঁরা হলেন বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া, গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর, হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার, রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী ও কল্যাণীর বিধায়ক অম্বিকা রায়। সেই সময় মতুয়ারা অভিযোগ করেছিলেন, “ভোটের সময় মতুয়াদের ব্যবহার করা হয়। দলের সাংগঠনিক পদে তাঁদের বসানো হয় না।” অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের সাধারণ সম্পাদক সুখেন্দ্রনাথ গায়েন সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন, ”এখন থেকে মতুয়ারা আর কোনও রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করবে না।” বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়ে সোমবারই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ান খোদ সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়েন তিনি।
মতুয়া বিদ্রোহের আবহে সোমবারের পর মঙ্গলবার বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়ে সন্ধেয় ঠাকুরনগরে নিজের বাড়িতে ৫ অনুগামী মতুয়া বিধায়ককে বৈঠকে ডেকেছিলেন স্থানীয় সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় জাহাজ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur)। যদিও বৈঠকে প্রথমে হাজিরা দেন ৩ জন। তাঁদের মধ্যে একজন শান্তনুর অগ্রজ সুব্রত ঠাকুর। বাকি দু’ জন বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া ও হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার। বৈঠকে দেরিতে পৌঁছন রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী। কল্যাণীর বিধায়ক অম্বিকা রায়। আরেক বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষও বৈঠকে যোগ দিতে পারেন বলে কানাঘুষো চলছিল ঠিকই। তবে তাঁর দেখা মেলেনি। এই বৈঠক নিয়েই এবার মুখ খুললেন দিলীপ ঘোষ।