সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলায় দেখানো বন্ধ হোক আমির খানের লাল সিং চাড্ডা (Laal Singh Chaddha)! এই বয়ানে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করলেন বিজেপি নেতা ও আইনজীবী নাজিয়া ইলাহি খান। তাঁর দাবি, আমির খানের এই ছবিতে এমন কিছু বিষয় দেখানো হয়েছে যা খুবই স্পর্শকাতর। যা কিনা রাজ্যের শান্তি ভঙ্গ করতে পারে।
পশ্চিমবঙ্গে এই ছবির প্রদর্শন করা হলে শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হতে পারে এই আশঙ্কা প্রকাশ করে গত সপ্তাহে জনস্বার্থ মামলাটি দায়ের করেছেন নাজিয়া ইলাহি খান । আগামিকাল এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে ।
১১ আগস্ট আমিরের এই ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই বিতর্কের ঝড় ওঠে সর্বত্র। সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়ে যায় ছবি বয়কটের টেন্ড্র। এমনকী, সাংবাদিক বৈঠকে ছবিকে বয়কট না করার অনুরোধও করেছেন আমির খান। আগেই দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে এই ছবির প্রর্দশন নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
[আরও পড়ুন: ‘মধ্যমানের অভিনেত্রীদের পাশে আমার নাম কেন?’ ফিল্মফেয়ারকে একহাত নিলেন কঙ্গনা রানাওয়াত ]
দীর্ঘ ৪ বছরের প্রতীক্ষা শেষে বড়পর্দাতে ফিরেও নিজের ক্যারিশ্মা ছড়াতে চূড়ান্ত ব্যর্থ আমির খান। বক্স অফিসে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে তাঁর বহু প্রতীক্ষিত ছবি ‘লাল সিং চাড্ডা’। শোনা যাচ্ছে, সিনেমা হলে এর আয়ু এক সপ্তাহই। অর্থাৎ পরের সপ্তাহেই বেশিরভাগ প্রেক্ষাগৃহ থেকে সরিয়ে ফেলা হতে পারে বিগ বাজেটের এই ছবিকে। যদিও নির্মাতাদের দাবি, এখনও পর্যন্ত লোকসানের মুখ দেখেনি তারা।
রাখীবন্ধনের শুভলগ্ন অর্থাৎ গত ১১ আগস্ট মুক্তি পায় ‘লাল সিং চাড্ডা‘। প্রথম দিনে ১২ কোটি টাকার ব্যবসা করে ছবিটি। গত ১৩ বছরে উদ্বোধনী দিনে এমন খারাপ হালের সাক্ষী থাকতে হয়নি আমির খানকে (Aamir Khan)। আর মোট পাঁচ দিনে তাঁর ছবি ৪৫-৪৬ কোটি টাকা ব্যবসা করেছে বলে খবর। মাঝে শোনা গিয়েছিল, দর্শক কম থাকায় বেশ কিছু সিনেমা হলে শোয়ের সময় কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। যা পরিস্থিতি, তাতে চলতি সপ্তাহেই দেশের অধিকাংশ সিনেমা হল থেকে বিদায় নিতে পারে আমিরের ছবিটি।
১৯৯৪ সালে মুক্তি পাওয়া সুপারহিট হলিউড ছবি ‘ফরেস্ট গাম্প’-এর অনুকরণেই তৈরি ‘লাল সিং চাড্ডা’ (Laal Singh Chaddha)। যদিও এতে কিছু দেশীয় ছোঁয়া দিয়েছেন পরিচালক। তবে ছবিটি মুক্তির আগে থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তা বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছিল। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগ উঠেছিল আমির খানের বিরুদ্ধে। সেই প্রভাবেই কার্যত ভরাডুবি লাল সিং চাড্ডার। সূত্রের খবর, ছবিটি বক্স অফিসে জোর ধাক্কা খাওয়ায় রীতিমতো ভেঙে পড়েছেন মিস্টার পারফেকশনিস্ট। নিজের ঘনিষ্ঠ বন্ধুর কাছে নাকি হতাশাও প্রকাশ করেছেন তিনি। কিন্তু এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলছে না কেউই। উলটে নির্মাতাদের দাবি, এখনও কোনও লোকসান হয়নি তাদের।
আসলে সম্প্রতি শোনা গিয়েছিল, কিছু ডিসট্রিবিউটর নাকি প্রযোজকের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে। তারই উত্তরে নির্মাতাদের তরফে জানানো হয়েছে, এমন খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ভায়াকম ১৮-এর সিইও অজিত আন্ধারে বলেন, “বাইরের কোনও ডিসট্রিবিউটর এর সঙ্গে জড়িত নয়। এই দায়িত্ব শুধুমাত্র V18Studios-এর উপরই ছিল। আর প্রথম দফায় কোনও ক্ষতি হয়নি। ভারত ও ভারতের বাইরে এখনও ছবিটি প্রদর্শিত হচ্ছে। তাই গুজবে কান দেবেন না।” কিন্তু আমিরের সিনেমা নিয়ে যে উন্মাদনা থাকে, তা এবার যে চোখে পড়ছে না, সেটাও বাস্তব।