রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বঙ্গ বিজেপির ঘরোয়া কোন্দলে নয়া মাত্রা যোগ করলেন সায়ন্তন বসু। দলের বর্তমান রাজ্য নেতাদের কার্যত তুলোধনা করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বিস্ফোরক চিঠি দিলেন রাজ্য বিজেপির (BJP) প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক। সায়ন্তনের দাবি, বিজেপির রাজ্য নেতারা নিজেদের আদর্শ ভুলে তৃণমূলকে (TMC) অকারণে আক্রমণ করছে। এতে আসলে দলেরই ক্ষতি হবে। বঙ্গ বিজেপি বর্তমানে বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের দলে পরিণত হয়েছে বলে দাবি সায়ন্তনের।
দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাকে (JP Nadda) লেখা চিঠির ছত্রে ছত্রে রাজ্যের বর্তমান নেতৃত্বকে আক্রমণ করেছেন সায়ন্তন (Sayantan Basu)। তিনি দাবি করেছেন, ২০২১ সালে রাজ্যে বিজেপির ভরাডুবির একমাত্র কারণ রাজ্য নেতৃত্বের অযোগ্যতা। এই মুহূর্তে বিজেপি বামেদের থেকেও পিছিয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেছেন বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক। তাঁর দাবি, এখন ভোট হলে লড়াই হবে তৃণমূল এবং সিপিএমের (CPIM)। বামেরা যে ধাঁচে আন্দোলন করছে, সেটারও প্রশংসা শোনা গিয়েছে সায়ন্তনের মুখে। তাঁর দাবি, দুর্নীতি ইস্যুতে রাজ্যের শাসকদল বিপাকে পড়লেও বিজেপি তার সুবিধা নিতে পারছে না। বরং বামেদের ছাত্র-যুবরা অনেক বেশি সক্রিয়।
[আরও পড়ুন: যোগ্যতার থেকেও বিশ্বাসযোগ্যতা বেশি গুরুত্বপূর্ণ! মোদিকে নিয়ে বেফাঁস সুকান্ত]
বিস্ফোরক চিঠিতে সায়ন্তন দাবি করেছেন, ১৯৮০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত যাঁরা বঙ্গে বিজেপির জন্য প্রাণপাত করেছেন, তাঁদের দলে কোনও সম্মান নেই। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে অন্য দল থেকে যাঁরা দলে এসেছেন, তাঁদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তাঁদেরই অপেক্ষাকৃত নিরাপদ আসনে প্রার্থী করা হয়েছে। আদি বিজেপি কর্মীরা ব্রাত্য থেকে গিয়েছেন। এরপরই সায়ন্তন বলেন, বিজেপি এখন বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের দল হয়ে গিয়েছে। অনেকের মধ্যেই ধারণা তৈরি হয়েছে, সিবিআই-ইডি (CBI-ED) থেকে বাঁচতে অনেকে দলে আসছেন। তার ফলে দলের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: টার্গেট পঞ্চায়েত নির্বাচন, বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতাদের ব্যবহার করে ঘুঁটি সাজাতে চাইছে গেরুয়া শিবির!]
উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা ভোটের পর বিজেপির রাজ্যস্তরের পদ খুইয়েছেন সায়ন্তন। সেভাবে তাঁকে সক্রিয় রাজনীতিতেও দেখা যায়নি। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে যে স্বরে তিনি বিঁধলেন, সেটা রীতিমতো বিস্ফোরক। তিনি সাফ বলে দিচ্ছেন, দলে নতুনদের সংখ্যাই এখন বেশি। কিছু সিনিয়র নেতা, বিরোধী দলনেতা ও সাংসদ আছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) শীর্ষ নেতাদের যে ভাষায় আক্রমণ করে চলেছেন তা যথাযথ নয়। নিজেদের কথা না বলে, তারা দলের আদর্শকে মাথায় রেখে জাতীয় স্বার্থের কথা তুলে ধরুক। একমাত্র জাতীয় ইস্যুই বিজেপিকে বিকল্প হিসাবে তুলে ধরতে পারে।
এই চিঠিকে হাতিয়ার করে বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, “উনি রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। কোন মডেল, কী তাদের ব্যাপার। যে চিঠি লিখেছেন, তিনি জানেন। দেখলাম বিজেপির বদলে বামেরা উঠে আসছে। এটা মোহভঙ্গ। সিপিএমে ফিরছে। তবে আমি বলব মানুষ তৃণমূলে ফিরবেন।”