রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে কার্যত লুকিয়ে গঙ্গা আরতি বিজেপির (BJP)। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার হাতেগোনা কয়েকজন নেতা-কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে বাবুঘাটে নমো নমো করে আরতি সারলেন। আরতি শেষে সুকান্ত মজুমদারের হুঁশিয়ারি, “পুলিশ ডালে-ডালে চললে, আমরা পাতায়-পাতায় চলি। বলেছিলাম গঙ্গা আরতি করব। প্রতীকীভাবে সেই আরতি করলাম।”
মঙ্গলবার বাবুঘাটে গঙ্গা আরতি নিয়ে পুলিশ-বিজেপি সংঘাত তুঙ্গে ওঠে। সমস্যা এড়াতে বাবুঘাট চত্বর মুড়ে ফেলা হয়েছে নিরাপত্তার চাদরে। করতে দেওয়া হচ্ছে না জমায়েত। আমজনতার সুবিধার্থে রাস্তায় পুলিশি প্রহরা বসানো হয়েছে। এদিকে পুলিশের সঙ্গে বচসার জেরে বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ-সহ একাধিক নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে। তবু দমতে নারাজ গেরুয়া শিবির। শেষে কার্যত লুকিয়ে চুরিয়ে বাবুঘাটে আরতি সারলেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: কুণালকে ‘এলিতেলি’ বলে কটাক্ষ মিঠুনের, পালটা ‘মহাগুরু’র গোপন কথা ফাঁস তৃণমূল মুখপাত্রের]
সেনার অনুমতি মিলেছিল। ছিল না পুলিশের অনুমতি। তাই বাবুঘাটে বিজেপির মঞ্চ খুলে দেয় পুলিশ। তাদের যুক্তি ছিল, শহরে জি-২০ সম্মেলন চলছে। গঙ্গাসাগর মেলা রয়েছে। প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তাই বিজেপির এই কর্মসূচিতে নিরাপত্তা দিতে পারবে না কলকাতা পুলিশ। এই কারণে এদিনের গঙ্গা আরতির কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া হয়নি। কিন্তু তা মানতে রাজি নয় গেরুয়া শিবির। যেনতেন প্রকারেণ আজই বাজে কদমতলা ঘাটে গঙ্গা আরতি করতে মরিয়া তারা।
[আরও পড়ুন: হাই কোর্টে এজলাস বয়কট কাণ্ড: বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে রুল ইস্যু বিচারপতি মান্থার, বাড়ল নিরাপত্তা]
সজল ঘোষের হুঙ্কার, “এখানেই গঙ্গা আরতি করব। সেখানে কোনও সরকারের বিসর্জন হবে কি না তা বলতে পারব না।” পালটা তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “সম্পূর্ণ প্রশাসনিক ব্য়াপর। দলের ব্যাপার নেই। ত্রিপুরায় যেমন যে যে কারণে প্রশাসনিক বিষয় সামনে রেখে সভা করার অনুমতি দিত না, সেই অংশগুলো পড়ে নিক। আর এখানে এত পুণ্যার্থী। এত মানুষ সামলাতেই পুলিশ ব্যতিব্যস্ত। তৃণমূলও কিছু করতে যাচ্ছে না। সস্তার রাজনীতি করতে চাইছে বিজেপি।”
এদিকে বেলা বাড়তেই বাবুঘাটে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়। পালটা জমায়েত করেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। তাঁরা ফের পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ান। পরে তাঁদের আটক করে পুলিশ। আটক করা হয় বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ, কাউন্সিলর সজল ঘোষ, দক্ষিণ কলকাতা বিজেপির সভাপতি সংঘমিত্রা চৌধুরী- সহ বহু কর্মীকে। শেষে পুলিশের নজর এড়িয়ে বাজে কদমতলা ঘাটের পরিবর্তে বাবুঘাটে গঙ্গা আরতি সারেন সুকান্ত। যা দেখে রাজনৈতিক মহল বলছে, লোকবল কম থাকায় লুকিয়ে চুরিয়ে প্রতীকী গঙ্গা আরতি করলেন তাঁরা।