বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: নরেন্দ্র মোদি (PM Modi) ও অমিত শাহর (Amit Shah) গড়। টানা আড়াই দশক ক্ষমতায় দল। কয়েক মাসের মধ্যেই বিধানসভা ভোট। কিন্তু প্রবল সরকার বিরোধী হাওয়ায় ক্ষমতা ধরে রাখা কার্যত চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে গেরুয়া শিবিরের। গতবারের বেশ কয়েকটি আসন হাতছাড়া হওয়া নিশ্চিত। বাড়বে কংগ্রেসের আসন সংখ্যা।
দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীর মাঝে এক্স ফ্যাক্টর হতে চলেছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি (AAP)। তারাই সরকার গড়ার আসল কারিগর হবে বলেই মনে করছে গেরুয়া শিবির। বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকের আগে গুজরাট (Gujarat) থেকে যে রিপোর্ট কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে এসেছে, তাতে মাথায় হাত অমিত শাহ, জে পি নাড্ডাদের। ভোটের দিন যত এগোচ্ছে, গেরুয়া গড় গুজরাট হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল হচ্ছে বলেই সূত্রের খবর।
[আরও পড়ুন: খোদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাংলোর নির্মাণ বেআইনি, দু’সপ্তাহেই গুঁড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ হাই কোর্টের]
১৮২ আসন বিশিষ্ট গুজরাট বিধানসভা। চলতি বছরের শেষে বিধানসভা নির্বাচন। ২০১৭ সালে ৯৯টি আসন পেয়ে সরকার গড়ে বিজেপি। কংগ্রেসের ঝুলিতে জোটে ৭৭টি আসন। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে সেবারও প্রচুর কাঠখড় পোড়াতে হয় মোদি-শাহদের। এবার পরিস্থিতি আরও কঠিন ও জটিল হবে বলেই আশঙ্কা গেরুয়া শিবিরের শীর্ষনেতাদের। সম্প্রতি রাজ্যের একটি বেসরকারি সংস্থা ও বিজেপির অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা পড়ে। দু’টি রিপোর্টেই উল্লেখ করা হয়েছে, গতবারের মতো বিজেপি গুজরাটে তিন অঙ্কে পৌঁছতে পারবে না বলে।
উলটে এবার আরও ৯ থেকে ১০টি আসন কমতে পারে। সেক্ষেত্রে কংগ্রেস ৪-৫টি আসন বাড়িয়ে নিতে পারে বলে বিজেপি সূত্রের খবর। প্রচলিত আছে, আমেদাবাদ যার গুজরাট তার। এখানেও বড়সড় ধাক্কা খেতে পারে গেরুয়া শিবির। বেসরকারি সংস্থার রিপোর্ট, এখানে ১১টি বিজেপি ও ৯টি আসন কংগ্রেস পেতে পারে। বিজেপির শক্ত ঘঁাটি বলে পরিচিত গান্ধীনগরেও গেরুয়া শিবিরের জন্য ধাক্কা অপেক্ষা করছে বলে মনে করা হচ্ছে। এখানে পঁাচ আসনের মধ্যে তিনটি কংগ্রেসের ও দু’টি বিজেপির দখলে যেতে পারে। আদিবাসী অধ্যুষিত ডাঙ জেলায় বড় ধাক্কা খেতে পারে বলে বিজেপি সূত্রে খবর।
[আরও পড়ুন: ‘মদ্যপ’ ভগবন্ত মানকে নামিয়ে দেওয়া হয় জার্মানির বিমান থেকে! তদন্তের নির্দেশ কেন্দ্রের]
এখানে ৬টি আসনের মধ্যে এবার মোদি-অমিত শাহরা একটিতে পদ্ম ফোটাতে ব্যর্থ হবেন। ফলে এককভাবে গরিষ্ঠতা পাওয়া পদ্মশিবিরের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দঁাড়িয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত কেজরিওয়াল কী করতে পারেন, তার উপর দু’দলের ভাগ্য নির্ভর করছে। বিজেপির অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট, গুজরাটে তিনটি আসন পেতে পারে আপ। কেজরি যেভাবে প্রায়ই রাজ্যে এসে ভূরি ভূরি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তাতে আসন বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে কংগ্রেসকেই মাশুল গুনতে হবে। তাই আপাতত দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী গুজরাটে পা রাখলেই তঁাকে আক্রমণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। যাতে সরকার বিরোধী মানুষের দৃষ্টি কেজরিওয়ালের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া যায়।