বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: অনাস্থা প্রস্তাবের আলোচনায় ‘টার্গেট বেঙ্গল’ কৌশল নিল বঙ্গের গেরুয়া ব্রিগেড। আলোচনায় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ টেনে আনার সিদ্ধান্ত বাংলার বিজেপি সাংসদদের। ১৭ ঘণ্টার আলোচনায় বাংলা থেকে খুব বেশি তিন অথবা চারজন সাংসদ বলার সুযোগ পাবেন। কারা বলবেন তা এখনও চূড়ান্ত না হলেও দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদার, লকেট চট্টোপাধ্যায়, সৌমিত্র খাঁ ও খগেন মুর্মুদের মতো সুবক্তাদের কথা ভেবে রেখেছে গেরুয়া শিবির।
বঙ্গ ব্রিগেডের নেতা মালদহ দক্ষিণের সাংসদ খগেন মুর্মুদের নাম প্রস্তাবের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও বক্তা তালিকা তৈরি হয়নি বলে জানান তিনি। রাজ্য সভাপতি ও সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে কথা বলে তালিকা জমা দেবেন বলে জানান তিনি। আগামী ৮ ও ৯ আগস্ট সংসদে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হবে। ১০ আগস্ট জবাবি ভাষন দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। কিন্তু বাংলা থেকে বিজেপি সাংসদদের কারা বলবেন তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। সেইসঙ্গে আলোচনায় তৃণমূল কংগ্রেস ও রাজ্য সরকারকে নিশানা করার পরিকল্পনা করেছে বঙ্গের গেরুয়া সাংসদরা। তাঁদের হাতিয়ার বিভিন্ন সময়ে কেন্দ্রীয় সরকার, বিভিন্ন কমিশন ও বিজেপির (BJP) পাঠানো তথ্য অনুসন্ধান দলের রিপোর্ট। এছাড়া আদালতে মামলা ও বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ। পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকে একের পর এক ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে ধরার কৌশল নিয়েছে বঙ্গের সাংসদরা।
[আরও পড়ুন: যৌন হেনস্তার পর বেআইনিভাবে বালি খননের অভিযোগ, নয়া কেলেঙ্কারিতে বিপাকে ব্রিজভূষণ]
কীভাবে প্রশাসনের একাংশ শাসকদলের হয়ে কাজ করছে সেই প্রসঙ্গও আলোচনায় তুলে ধরার কৌশল নেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে মণিপুরের পালটা মালদহের ঘটনাও তুলে ধরতে বক্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান এক সাংসদ। সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ টেনে ৩৫৫ ধারা জারির দাবি করা যায় কিনা তা নিয়ে আলোচনা করছেন বাংলার সাংসদরা। জবাবি ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ও বক্তব্য রাখতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) অবধারিতভাবে বাংলার প্রসঙ্গ টানবেন। তাঁদের হাতে অস্ত্র তুলে দিতে বাংলার একের পর এক ঘটনা তথ্য সহকারে তুলে ধরতে বঙ্গ শিবিরে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই সর্ববারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার (JP Nadda) কাছে প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদের পেশ করা তথ্য অনুসন্ধান দলের রিপোর্ট নিয়ে পড়াশোনা করছেন তাঁরা। সেখান থেকে তথ্য অনুসন্ধান দলের অভিজ্ঞতাও তুলে ধরবেন বাংলার বক্তারা।
[আরও পড়ুন: বোরখা পরা কেন? মুম্বইয়ে ছাত্রীদের কলেজে ঢুকতে বাধা, বিক্ষোভ পড়ুয়াদের]
জোর দেওয়া হচ্ছে বক্তা তালিকা তৈরির ক্ষেত্রেও। চলতি সপ্তাহেই বাংলার বক্তাদের তালিকা প্রস্তুত করে সংসদের চিফ হুইপের কাছে জমা দেওয়া হবে বলে জানান এক সাংসদ। অন্যদিকে, বাংলার প্রতি কেন্দ্রের আর্থিক বঞ্চনার জবাবও দেবেন বাংলার সাংসদরা। আর্থিক বঞ্চনা নিয়ে রাজ্যের তরফে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর দাবি, ১০ বছর আগে ইউপিএ (UPA) সরকারের সময় বাংলা কতো টাকা কেন্দ্রের কাছ থেকে পেত আর এখন কতে পাচ্ছে তা শ্বেতপত্র হিসাবে প্রকাশ করলেই সত্য সামনে চলে আসবে।