বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: সংখ্যালঘুদের সমর্থন নিয়ে করা মন্তব্যের দরুন দলের অন্দরে আরও চাপে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর মন্তব্যকে কার্যত কাণ্ডজ্ঞানহীন এবং শিক্ষানবিশ নেতার মতো আচরণ বলে কড়া সমালোচনা করলেন সংখ্যালঘু মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি জামাল সিদ্দিকী (Jamal Siddiqui)।
তিনি বলেন, “শুভেন্দুর এই ধরনের মন্তব্য করা ঠিক হয়নি।” পাশাপাশি বিরোধী দলনেতাকে নব্য বিজেপির তকমাও লাগিয়ে দেন তিনি। বলেন, “শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) বিজেপিতে নতুন এসেছেন। তাই দলের নিয়ম জানেন না। বিজেপি সমর্কে জানতে হবে।” মাটির সঙ্গে বিরোধী দলনেতার কোনও যোগাযোগ নেই বলেও খোঁচা দেন জামাল সিদ্দিকী।
[আরও পড়ুন: মহিলাদের হাজার টাকা, ফ্রি বিদ্যুৎ! ভোটমুখী হরিয়ানায় ‘৫ গ্যারান্টি’ আপের]
সম্প্রতি বঙ্গ বিজেপির (BJP) পর্যলোচনা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’ স্লোগানকে চ্যালেঞ্জ করেন শুভেন্দু। জানান, এই নীতির সঙ্গে তিনি একমত নন। বিজেপিতে সংখ্যালঘু মোর্চার প্রয়োজন নেই। দলের লোকসভার ফলাফল পর্যালোচনা বৈঠকে তিনি বলেন, “সংখ্যালঘুরা বিজেপিকে ভোট দেয় না। তাই সবকা সাথ সবকা বিকাশের প্রয়োজন নেই। যাঁরা আমাদের সঙ্গে থাকবে, তাঁদের সঙ্গে আমরা থাকব।” বিরোধী দলনেতার এই মন্তব্যে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়। দিল্লি পর্যন্ত জল গড়ায়। শুভেন্দু প্রকৃতই কি বলতে চেয়েছেন সেই ব্যাখ্যা তলব করা হয়। ক্ষোভ সামাল দিতে নেমে দলের অভ্যন্তরের বিভাজন আরও স্পষ্ট করেন রাজ্য সভাপতি ও কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তিনি জানান, বিরোধী দলনেতার বক্তব্যের সঙ্গে দল একমত নয়। শুভেন্দু যা বলেছেন, সেটা একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত মতামত বলে জানান সুকান্ত। সমালোচনা করেন রাজ্যের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি চার্লস নন্দীও।
[আরও পড়ুন: ৩০ ঘণ্টা লেট, যাত্রীদের পুরো ভাড়া ফেরানোর ঘোষণা এয়ার ইন্ডিয়ার]
এবার শুভেন্দুকে কার্যত তুলোধনা করলেন বিজেপির সংখ্যালঘু সলের সর্বভারতীয় সভাপতি জামাল সিদ্দিকী। শনিবার তিনি জানান, “হয়তো শুভেন্দু ভুল করে এই মন্তব্য করেছেন। তাছাড়া তিনি বিজেপির পুরনো নেতা নন। মাটির সঙ্গেও যাগ নেই। আসলে উনি তৃণমূ্ল (TMC) থেকে বিজেপিতে এসেছেন। মানুষ যেখান থেকে আসে সেখানকার পরিচয় তার মধ্যে থেকে যায়। শুভেন্দুর মধ্যেও তা রয়ে গিয়েছে।” বিরোধী দলনেতার বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে জামাল সিদ্দিকী জানান, “সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ বিজেপির আত্মা। শরীর থেকে আত্মাকে বিচ্ছিন্ন করলে দলটাই থাকবে না। বিজেপির উদ্দেশ মানুষের সেবা করা। ক্ষমতা দখল নয়। ক্ষমতায় থাকলে আরও বেশি মানুষের সেবা করা যায়।” প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য স্মরণ করিয়ে সিদ্দিকী বলেন, “নরেন্দ্র মোদি সবসময় বলেন, যারা আমাদের সমর্থন করেন না তাদেরও বিকাশ করতে হবে। তবেই দেশ এগোবে।”