সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একই দলে থাকলেও বিপ্লব দেবের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক যে মোটেও ভাল নয়, তা প্রকাশ পেয়েছে একাধিকবার। সংঘাতের মাঝে এবার বিধায়ক পদ ছাড়লেন ত্রিপুরার বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা সুদীপ রায়বর্মণ (Sudip Roy Barman) এবং আশিস সাহা। দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন দু’জনে। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ ইস্তফাপত্র জমা দেন তাঁরা।
দলত্যাগ এবং বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর সুদীপ রায়বর্মণ বলেন, “আমরা অনেক ধৈর্য ধরেছি। শোধরানোর কথা ভেবেছি। কিন্তু না। তাই মানুষের জন্য এই কাজটুকু করলাম। অনেক হালকা লাগছে। দলে ছিলাম। মানুষের চাহিদাপূরণ করার অনেক চেষ্টা করেছিলাম। দিন দিন মানুষ অপমানিত হচ্ছেন।” সাধারণ মানুষ, সংবাদমাধ্যম – সকলের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ সুদীপ রায়বর্মণের। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সংবাদের শিরোনাম কি হবে, তা ধার্য করে দেওয়া হয়। টিভি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পত্রিকার মালিককে হুমকি দেওয়া হয়। গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ভাঙচুর করা হয়।” তাই দল এবং বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেই জানান সুদীপবাবু।
[আরও পড়ুন: ‘আল্লাহ তেরো নাম, ঈশ্বর তেরো নাম’, লতার শেষযাত্রায় শাহরুখের প্রার্থনায় ফুটে উঠল আসল ভারত]
উল্লেখ্য, সুদীপ রায়বর্মণ দীর্ঘদিন ধরে ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন। ছিলেন বিরোধী দলনেতাও। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপর তোপ দেগে দল ছাড়েন সুদীপ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে ব্রতী হয়ে যোগ দেন তৃণমূলে। ত্রিপুরায় সেসময় প্রধান বিরোধী দল হয়ে ওঠে সুদীপ রায়বর্মনের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল। কিন্তু ধীরে ধীরে ত্রিপুরায় তদানীন্তন বাম সরকারের প্রধান বিরোধী হয়ে ওঠে বিজেপি। কাগজেকলমে প্রধান বিরোধী দল হয়েও আন্দোলনের জমি হারায় তৃণমূল। তখন বাকি বিধায়কদের নিয়ে তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখান সুদীপ। তাঁর হাত ধরেই ত্রিপুরায় শূন্য থেকে ক্ষমতার শীর্ষে আসে বিজেপি।
তবে সুদীপ রায়বর্মনের সঙ্গে বিপ্লব দেবের বিবাদ ক্রমশ চরমে পৌঁছয়। এর আগেও একাধিকবার বিপ্লব দেবের সরকারের কর্মসূচি এবং কার্যকলাপের সমালোচনা করেন। এমনকী, দলবিরোধী কার্যকলাপের জেরে তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকেও বরখাস্ত করা হয়। মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত হওয়ার পর বিজেপি ছেড়ে সুদীপের কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু, তিনি সেই সময় দলত্যাগ করেননি। এবার কি তবে কংগ্রেসের হাত ধরতে চলেছেন সুদীপ, উঠছে প্রশ্ন।