নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীদের সাজা কার্যকর করার ক্ষেত্রে আগামী দিনে কি আরও কড়া আইন আনতে চলেছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) সরকার? এমন সম্ভাবনাই উস্কে দিয়েছে ভারতীয় দন্ড বিধির নয়া তিন বিল।
গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত সংসদের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লার উপস্থিতিতে তিন বিলের উপর আলোচনা চলছে। তাতে কমিটির সদস্য শাসক, বিরোধী উভয় পক্ষের সাংসদরাই বিলের উপর নিজেদের মতামত ও সুপারিশ তুলে ধরেছেন।সূত্রের খবর, বৈঠকের শেষদিনে শাসক দল বিজেপির (BJP) এক সাংসদ মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত অপরাধীদের সাজা কার্যকর করার ক্ষেত্রে আইনি জটিলতার কারণে যে দীর্ঘসূত্রিতার পরিস্থিতি তৈরি হয় তার সমাধান নতুন বিলে থাকার প্রয়োজন রয়েছে বলে মত প্রকাশ করেছেন। সঙ্গে এও সুপারিশ করেছেন যে, মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত অপরাধীরা ফাঁসি মকুবের জন্য আবেদন করতে চাইলে তা সাজা ঘোষণার একমাসের মধ্যে করতে হবে এবং তার উপর ফয়সালা করার জন্যও নির্দিষ্ট সময়সীমা ধার্য করারও প্রয়োজন রয়েছে। একমাত্র দেশের রাষ্ট্রপতির কাছে ফাঁসি মকুবের আবেদন করলে সেখানেই কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকবে না বলেও প্রস্তাব দিয়েছেন ওই বিজেপি সাংসদ।
[আরও পড়ুন: ইসরোয় যাওয়ার আগে কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে আসতে ‘বারণ’, বিতর্কের জবাব দিলেন মোদি]
জানা গিয়েছে, কমিটিতে থাকা বিজেপির অন্যান্য সদস্যরাও এই প্রস্তাবকে সমর্থন করেছেন। সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে নারী ও শিশুদের ধর্ষণ, শ্লীলতাহানির মতো যে কোনও ধরনের যৌন হেনস্থাকেই গর্হিত অপরাধ হিসেবে দেখা এবং তাতে কড়া শাস্তির ব্যবস্থা নতুন বিলগুলিতে থাকার প্রয়োজন রয়েছে বলে বিশদে আলোচনা হয়েছে। কমিটির সদস্য শাসক ও বিরোধী– উভয় পক্ষের সাংসদরাই এই বিষয়টিতে সহমত হয়েছেন। পাশাপাশি ভুয়া মামলার কারণে সাধারণ মানুষকে যাতে হয়রানির শিকার না হতে হয়, দোষ না করেও আইনি জটিলতার কারণে বছরের পর বছর আদালতের চক্কর কাটতে না হয়, সেদিকে নজর দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলে বৈঠকে একাধিক সদস্য সরব হয়েছেন।
সূত্রের খবর, এ বিষয়ে বাংলার বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষকেই সবচেয়ে বেশি সরব হতে দেখা গিয়েছে। মানুষ যাতে সহজে ন্যায় পেতে পারে তার জন্য আইনের সরলীকরণের প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। সঙ্গে অভিযোগ করেন, তিনি নিজে ভুয়া মামলা নিয়ে ভুক্তভোগী এবং বাংলার সমস্ত আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং অনেক সময় তিনি জানতেও পারেননি। অপরাধ না করেও বছরের পর বছর কিভাবে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য আদালতের দজরজায় দরজায় ঘুরতে হয় তা বোঝাতে এদিনের বৈঠকে গল্পও শুনিয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: যুবককে ছেঁচড়ে নিয়ে গেল ট্রাক, রাস্তায় ছড়াল টুকরো দেহাংশ! পলাতক চালক]
তাতে বৈঠকে হাসির পরিবেশ তৈরি হলেও অধিকাংশ জনই তাঁকে সমর্থন করেছেন। এমনকী কংগ্রেস সাংসদ দ্বিগ্বিজয় সিং-ও দিলীপের পিঠ চাপড়ে দিয়ে সমর্থন করেছেন। মানুষকে আইনের ‘ভয়’ থেকে বার করে আনতে হবে এই কথার উপরই দিলীপ এদিন বারবার জোর দিয়েছেন।