সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বঙ্গে আসছেন নরেন্দ্র মোদি। শিলিগুড়িতে সভা। তারই মাঝে গেরুয়া শিবিরে ফের সংকট। বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারীর দলবদলের মাত্র দুদিনের মাথায় বিজেপি ছাড়লেন ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রম। দল ছাড়ার কথা জানিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে চিঠিও পাঠিয়েছেন তিনি। লোকসভার আগে শক্ত ঘাঁটিতে ভাঙনের ফলে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বিগ্ন পদ্মশিবির। কাকে এই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করা হবে, তা নিয়ে তুঙ্গে চর্চা।
আচমকা লোকসভা নির্বাচনের মুখে কেন দল ছাড়লেন কুনার, সে কারণ অবশ্য স্পষ্ট নয়। রাজনৈতিক মহলে চলছে নানা কাটাছেঁড়া। বলে রাখা ভালো, গত লোকসভা ভোটে জঙ্গলমহলে ভালো ফল করে বিজেপি। ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্র জঙ্গলমহলেরই অন্তর্গত। এবারও সেখানে ভালো ফলেরই আশা বিজেপির। প্রথম দফার তালিকায় বাংলার ২০টি আসনের প্রার্থীর নামও ঘোষণা করেছে পদ্মশিবির। তবে প্রথম দফার প্রার্থী তালিকায় ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে কোনও প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি। গত ৫ বছরে এলাকায় ভালোই কাজ করেছেন কুনার হেমব্রম, অন্তত পক্ষে এমনই দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের। সে কারণে কারও কারও দাবি, এবারও হয়তো ভোটযুদ্ধের সৈনিক হিসাবে কুনারের উপরেই আস্থা রাখতে পারত বিজেপি।
[আরও পড়ুন: খাস কলকাতায় পার্টিতে কলেজছাত্রীকে মাদকাচ্ছন্ন করে ‘গণধর্ষণ’, ধৃত নাবালক-সহ ৫]
যদিও কেউ কেউ বলছেন, এবার ভোটে লড়াইয়ের টিকিট পেতেন না কুনার। তাঁর পরিবর্তে অন্য কাউকে প্রার্থী হিসাবে ভাবা হচ্ছিল। চিকিৎসক প্রণব টুডু থেকে মৌসুমী মুর্মু কিংবা ক্ষুদিরাম টুডু – সম্ভাব্য নাম হিসাবে উঠে আসছিল এমনই একাধিক ব্যক্তি। সেই ক্ষোভ থেকেই হয়তো লোকসভা নির্বাচনের আগেভাগেই দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত কুনার হেমব্রমের। যদিও এত জল্পনার মাঝে কুনারের দাবি, দলত্যাগের কারণ সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত। তবে কি বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারীর দেখানো পথে হেঁটে লোকসভার আগে ফুলবদল করবেন কুনার? পদ্ম ছেড়ে ঘাসফুল শিবিরে যোগ দেবেন তিনি? সেই জল্পনা অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন কুনার হেমব্রম। তাঁর দাবি, আপাতত রাজনীতি থেকে কিছুটা দূরে থাকতে চান। এখনই নাকি অন্য কোনও দলে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেননি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবারই চমক দেন রানাঘাট দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী। ওইদিনই যোগ দেন তৃণমূলে। সকলকে কার্যত চমকে দিয়ে নারীদিবসের আগে তৃণমূলের মিছিলেও হাঁটতে দেখা যায় তাঁকে। মতুয়া গড় হিসাবে পরিচিত রানাঘাটের বিধায়কের দলবদল যে লোকসভা ভোটের আগে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। সেই ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতেই আবার শক্তঘাঁটি হিসাবে পরিচিত জঙ্গলমহলের সাংসদের দলত্যাগ। জোড়া ধাক্কায় বঙ্গ বিজেপি যে যথেষ্ট চাপে, তা নতুন করে বলার কিছু নেই।