রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক পদ থেকে অনুপম হাজরাকে(Anupam Hazra) সরিয়ে দিয়েছে বিজেপি। আর অনুপমের এই অপসারণের পরই কেন্দ্রীয় সম্পাদক পদে বাংলা থেকে কাকে দেওয়া হবে তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে দলের মধ্যে। দাবিদার হিসাবে অনেকের নাম উঠে এসেছে। সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি পদ চলে যাওয়ায় দিলীপ ঘোষ বর্তমানে কোনও সাংগঠনিক পদে নেই। বঙ্গ বিজেপির মধ্যে একাংশ চাইছে দিলীপকে কেন্দ্রীয় সম্পাদক করা হোক।
এক্ষেত্রে অবশ্য অন্য সমস্যা রয়েছে। দিলীপবাবু কেন্দ্রীয় সহ—সভাপতি পদে ছিলেন। সেখান থেকে কেন্দ্রীয় সম্পাদক তাঁকে করা হলে তা সাংগঠনিকভাবে নিচুপদ হবে। দিলীপবাবুর অনুগামীরা দলের মধ্যেই দাবি তুলেছে মেদিনীপুরের সাংসদকে কেন্দ্রীয় সম্পাদক পদে নিয়ে আসা হোক। কারণ, বঙ্গ বিজেপিতে দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা এখনও দিলীপ ঘোষেরই রয়েছে। যদিও দিলীপকে ফের কেন্দ্রীয় কোনও পদে নিয়ে যাওয়ার পথে দলে তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীরাই প্রধান বাধা। সংখ্যায় কম হলেও, দলের একটা অংশ দাবি করেছে, রাহুল সিনহাকে ফের কেন্দ্রীয় সম্পাদক করা হোক।
[আরও পড়ুন: কলকাতায় ভাগবত, দুর্গাপুরে দত্তাত্রেয়, হিন্দুত্বের হাওয়া তুলতে লোকসভার আগে তৎপর RSS?]
কারণ, বঙ্গ বিজেপিতে এখনও সক্রিয়ভাবে সংগঠনের দায়িত্ব পালন করছেন রাহুল। রাজ্য সভাপতি পদ ছাড়ার পর রাহুল কেন্দ্রীয় সম্পাদক পদে ছিলেন। তাঁকে সরিয়ে হঠাৎ করেই বোলপুরের প্রাক্তন সাংসদ অনুপম হাজরাকে কেন্দ্রীয় সম্পাদক করা হয়। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরই অনুপমকে কেন্দ্রীয় পদাধিকারীতে নিয়ে আসেন অমিত শাহ—জে পি নাড্ডারা। কেন্দ্রীয় সম্পাদক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ায় সেই সময়ে ক্ষোভ প্রকাশও করেছিলেন রাহুল সিনহা। কাজেই বঙ্গ বিজেপির কয়েকজন ফের রাহুল সিনহাকে কেন্দ্রীয় সম্পাদক করার প্রস্তাব দিয়েছেন। এই দুজন না হলে বঙ্গ বিজেপির কোনও মহিলা নেত্রীকে কেন্দ্রীয় সম্পাদক করা যায় কী না তা নিয়েও আলোচনা চলছে বলে খবর।
মহিলা নেত্রী হিসাবে বাংলা থেকে লকেট চট্টোপাধ্যায়, দেবশ্রী চৌধুরীর নাম নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে। ভিন রাজ্যে ভোট প্রচারে একাধিকবার লকেটকে পাঠিয়েছেন শাহ-নাড্ডারা। দিল্লির নেতাদের ‘গুডবুক’-এ রয়েছেন লকেট। কিন্তু বঙ্গ বিজেপির সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন তিনি। কাজেই কেন্দ্রীয় পদে গেলে তাঁকে এই পদ ছাড়তে হবে। সেক্ষেত্রে সংঘ ঘনিষ্ঠ দেবশ্রী চৌধুরি রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক কোনও পদে নেই। তাছাড়া, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও ছিলেন তিনি। তাই তাই বাংলা থেকে কেন্দ্রীয় সম্পাদক পদে মহিলা মুখের তালিকায় দেবশ্রীর নামও রয়েছে।
এখনও পর্যন্ত যা খবর, রাজ্য বিজেপির কাছে তিনটি নাম চাওয়া হয়েছে। রাজ্য বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবির অবশ্য চাইছে বাংলা থেকে এমন কাউকে কেন্দ্রীয় সম্পাদক করা হোক, যে তাদের হাতের লোক হবে। না হলে অনুপম হাজরার মতো কেউ যদি আবার হয় তাহলে রাজ্য নেতাদের উপর চাপ বাড়বে। তবে বঙ্গ নেতাদের ইচ্ছা মতো কাউকে না করে নিজেদের পছন্দের কাউকেও বাংলা থেকে কেন্দ্রীয় সম্পাদক করতে পারে শাহ-নাড্ডারা।