রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বঙ্গভঙ্গ ইস্যুতে ফের নিজের অবস্থান বদল করলেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। জন বার্লার পাশে দাঁড়িয়ে শনিবারই পৃথক উত্তরবঙ্গ, জঙ্গলমহলের পক্ষে ‘সায়’ দেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। তবে তার ঠিক একদিন পর সোমবার ফের সুরবদল করলেন তিনি। বঙ্গভঙ্গের কথা মোটেও বলেননি বলেই দাবি করে বসলেন বিজেপি সাংসদ।
মাসকয়েক আগে পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্যের দাবি করে বসেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা (John Barla)। তারই সুরে সুর মিলিয়ে পৃথক জঙ্গলমহলের দাবি করে বসেন বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। তা নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। তবে গত শনিবার থেকে ফের প্রাসঙ্গিক বঙ্গভঙ্গের দাবি। কারণ ওইদিনই জন বার্লার পাশে বসে পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্যের দাবিতে ‘সায়’ দেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে উত্তরবঙ্গের কোনও উন্নতি হয়নি। চিকিৎসা, শিক্ষা, চাকরি, স্বাস্থ্যের জন্য অন্যত্র যেতে হয় উত্তরবঙ্গবাসীকে। কেন হাসপাতাল, ভাল স্কুল নেই সেখানে? জঙ্গলমহলের অবস্থাও এক। শালপাতা, কেন্দুপাতা নিয়ে মা-বোনেরা সেখানে জীবিকা নির্বাহ করেন। কেন তাঁদের চাকরির জন্য রাঁচি, ওড়িশা, গুজরাটে যেতে হচ্ছে? দেশের স্বাধীনতা, উন্নয়নের লাভ পাওয়ার অধিকার নেই তাঁদের?”
[আরও পড়ুন: সাতসকালে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, মহেশতলায় সম্প্রীতি উড়ালপুল থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিচে পড়ল লরি]
এর আগে জন বার্লা যখন পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্যের দাবি জানিয়েছিলেন তখন দিলীপ ঘোষ চড়া গলায় যেমন তার বিরোধিতা করেননি, তেমনই আবার সমর্থনও করেননি এভাবে। এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ফের বিতর্কে দিলীপ ঘোষ। পাশে পাননি তাঁর দলীয় নেতৃত্বকেও। হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় (Locket Chatterjee) এবং রাহুল সিনহা দলের রাজ্য সভাপতির মন্তব্যের বিরোধিতা করেন। “বাংলা কখনও ভাগ হবে না”, বলে দাবি করে বসেন লকেট। রাহুল সিনহাও (Rahul Sinha) জানিয়ে দেন, “বাংলা ভাগ নিয়ে পার্টির কোনও নীতি নেই। আমরা বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে।”
এই টানাপোড়েনের মাঝে সোমবার ফের সুরবদল করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। তিনি বলেন, “কোনও বঙ্গভঙ্গের কথা বলিনি। উত্তরবঙ্গ, জঙ্গলমহলের মানুষ ৭০-৭৫ বছর ধরে বঞ্চিত। তাঁরা এখনও চাকরির জন্য অন্য রাজ্যে যাচ্ছেন। চিকিৎসার জন্য বাইরে যাচ্ছেন। তাঁরা ভাবছেন এভাবে থাকলে কোনও উন্নতি হবে না। তাঁরা তাই আলাদা হতে চাইছেন। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা তাঁদের কথা তুলে ধরেছেন মাত্র।” রাজনৈতিক মহলের মতে, দলীয় নেতৃত্বকে পাশে না পেয়েই একদিনের ব্যবধানে বিতর্ক এড়াতে সুরবদল করলেন দিলীপ ঘোষ।