রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: দলীয় কর্মীদের মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে বলে বারবার সুর চড়িয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তবে করোনা মুক্তির পর প্রথমবারের চা চক্রে অন্য সুর তাঁর গলায়। শুধু বিজেপি নয় ঘাসফুল শিবিরের অনেকের নামেই মিথ্যে মামলার খাঁড়া ঝুলছে বলে দাবি দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh)। ক্ষমতায় আসার পর যেকোনও রাজনৈতিক দলের কর্মীদের এই মিথ্যে মামলার হাত থেকে রেহাই দেবেন বলেও আশ্বাস দিলেন বিজেপি সাংসদ।
করোনা থাবা বসিয়েছিল দিলীপ ঘোষের শরীরে। তাই বেশ কয়েকদিন সকলের সংস্পর্শ এড়িয়ে দূরে ছিলেন তিনি। চা চক্রে যোগ দেওয়া হয়নি তাঁর। তবে এখন একেবারে ফিট। বৃহস্পতিবার তাই জ্যাংরায় চা চক্রে উপস্থিত হন তিনি। এতদিন বিজেপি রাজ্য সভাপতি এলাকায় আসছেন বলে কথা। তাই তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে এলাহি আয়োজন করেন দলীয় নেতাকর্মীরা। জর্দা বাগান থেকে মিছিল করে ঘোড়ার গাড়ি চড়িয়ে দিলীপ ঘোষকে চা চক্রে যোগ দিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তৃণমূলকে একহাত নেন তিনি। বলেন, “নিজের দলের কর্মীদের নিজেরাই হত্যা করে সিপিএম যেমন ভাবাবেগের রাজনীতি করত, ঠিক তেমনি তৃণমূল নিজের দলে কর্মীদের নামেও মামলা করে রেখেছে, যাতে ভয়ে কেউ দল ছাড়তে না পারে। আমি তাই বলেছি এ ধরণের যত প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনৈতিক মিথ্যে মামলা আছে, তা যে দলেরই হোক, তাকে আমরা মুক্তি দেব।”
[আরও পড়ুন: এই বিশেষ কারণে কলকাতার রানওয়ে ছুঁল বিশ্বের সবচেয়ে বড় পণ্যবাহী বিমান]
জেপি নাড্ডা রাজ্য সফরে আসার আগেই বুধবার বিজেপি রাজ্যস্তরে সংগঠনে বড়সড় রদবদল হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে। তাঁর জায়গায় নতুন সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) হলেন অমিতাভ চক্রবর্তী। সে প্রসঙ্গেও এদিন মুখ খোলেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “সংগঠন করতে এসেছি আমরা। সংগঠন যেটা ঠিক করে, যাকে যা দায়িত্ব দেয় সেই দায়িত্ব আমরা পালন করি। সুব্রতদা বিজেপিতে ৫-৬ বছর কাজ করেছেন, তারপর ওনাকে হয়তো অন্য দায়িত্ব দেওয়া হবে। এই পরিবর্তন সংগঠনে চলতেই থাকে। এইভাবে আমরা কাজ করি।”
বাগনানের বিজেপি নেতা কিংকর মাজির মৃত্যুতেও ক্ষোভে ফুঁসছেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “যে কর্মীকে আমাদের গুলি করা হয়েছিল সে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করতে করতে গতকাল মারা যায়। সে রকম সিতাই, মেদিনীপুর ও উত্তর ২৪ পরগনার একজন মারা গিয়েছে। পুজোর মধ্যেও এই খুনখারাপি চলেছে। আমার মনে হয় এগুলো ইচ্ছা করে করছে। না হলে প্রশাসনের উপর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই সরকারের। যারা সমাজবিরোধী তারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সাধারণ মানুষকে খুন করছে।” যদিও তৃণমূলের তরফে বারবার অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।