রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: লাগাতার অন্তর্দ্বন্দ্বে জর্জরিত বঙ্গ বিজেপি (BJP)। বিদ্রোহের পারদ চড়ছেই। শৃঙ্খলাপরায়ণতার পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেওয়া সদস্যদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে শীর্ষ নেতৃত্ব। সদ্যই শোকজ করা হয়েছে রাজ্যস্তরের দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে। দলে যাঁদের অবদান আগাগোড়াই বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। তাতেও যে ঘরের অশান্তি থামানো গিয়েছে, এমনটা নয়। এবার তাই একটু নরমপন্থার আশ্রয় নিল বঙ্গ বিজেপি। বিক্ষু্ব্ধ বিধায়কদের কাছে টানতে তাঁদের উপর বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে সূত্রের খবর। আসন্ন পুরভোটে বিক্ষুব্ধদেরই আহ্বায়কের (Convenor) দায়িত্ব দেওয়া হতে চলেছে। তাতে যদি ক্ষোভ প্রশমন করা যায়।
যে কোনও নির্বাচনে দলের বিধায়কদেরই (MLA) দায়িত্ব দেওয়া হয়। আহ্বায়ক হিসেবে বিভিন্ন কেন্দ্রে নির্বাচনের খুঁটিনাটি প্রস্তুতি দেখেন তাঁরাই। সদ্য কলকাতা পুরনির্বাচনেও প্রত্যেক বরোর দায়িত্বে ছিলেন বিধায়করা। সামনে রাজ্যের বাকি পুরসভাগুলিতে ভোট। আহ্বায়ক হিসেবে বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের অগ্রাধিকার দিতে চাইছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। এমনই জল্পনা দলের অন্দরে।
[আরও পড়ুন: সন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তির জের? ছেলেকে খুন করে হোমগার্ডের আত্মহত্যায় নয়া মোড়]
আসলে একাধিক ইস্যুতে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে ‘বিদ্রোহ’। বিজেপির বড় ভোটব্যাংক মতুয়ারাও দ্বিধাবিভক্ত। CAA চালু করার দাবিতে তাঁরা অমিত শাহকে চিঠি পাঠাতে চলেছেন। এই ক্ষোভ দমন করতে না পারলে সংগঠনেরই প্রভূত ক্ষতি, তা বেশ টের পাচ্ছেন শীর্ষ নেতারা। আর তাই তা সামলাতে চরমপন্থা ও নরমপন্থা – উভয় রাস্তাই খোলা রাখতে চাইছেন তাঁরা। পাশাপাশি, জোনের সাংগঠনিক শীর্ষ পদাধিকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চায় নেতৃত্ব। মঙ্গলবারই নবদ্বীপ জোনের সঙ্গে আলোচনার কথা। অন্দরের এই পরিকল্পনা কতটা বাস্তবায়িত হয়, সেদিকে অবশ্যই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের। আসন্ন পুরভোটে কোন বিক্ষুব্ধ বিধায়ককে কী দায়িত্ব দেওয়া হয়, সেটাই দেখার।
[আরও পড়ুন: সাধারণতন্ত্র দিবসে ট্যাবলো বিতর্ক মামলা খারিজ করল হাই কোর্ট]
এদিকে, বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Mazumder) এবং সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর সমর্থনে এবার পোস্টার পড়ল রাজ্য দপ্তরের সামনে। বড় হোর্ডিংয়ে দু’জনের ছবি দিয়ে সমর্থনের কথা জানানো হয়েছে। দিন কয়েক আগেই অমিতাভ চক্রবর্তী বিরোধিতায় পোস্টারে ছয়লাপ হয়ে গিয়েছিল রাজ্য বিজেপির কার্যালয়ের বাইরে। সেখানে তাঁকে অপছন্দের কথা স্পষ্ট করেই প্রকাশ করেছিলেন একদল কর্মী, সমর্থক। এবার তাঁদেরই জবাব দিল আরেকপক্ষ। পোস্টারে স্পষ্ট করে লেখা – ‘আমরা আপনাদের সঙ্গে ছিলাম, আছি, থাকব’।