সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: তৃণমূলের একুশে জুলাইয়ের কর্মসূচির দিন রাজ্যজুড়ে বিডিও অফিস ঘেরাওয়ের কর্মসূচি নিয়েছিল বিজেপি। ভোট লুঠের প্রতিবাদে গেরুয়া শিবিরের শুক্রবারে এই কর্মসূচিকে ঘিরে নানা জায়গায় অশান্তি বাঁধল। প্রচারের আলোয় আসতে প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন করেই হট্টগোল বাঁধাল বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের চলল ধস্তাধস্তি।
রাজারহাটে বিডিও অফিস ঘেরাও কর্মসূচিতে এক মহিলা পুলিশের হাতে কামড়ে দিল এক বিজেপি কর্মী। নদিয়ার তেহট্টে বিজেপি কর্মীদের বিশৃঙ্খলা এমন জায়গায় পৌঁছাল যে আঙুল কেটে রক্ত ঝরল কেন্দ্রীয় বাহিনীর এক জওয়ানের। তৃণমূলের বক্তব্য, অশান্তি পাকানোর জন্যই যে একুশে জুলাইয়ের দিন বিজেপি এই বিডিও অফিস ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছিল সেটাই প্রমাণ হল। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল ভয় পেয়েই ১৪৪ ধারা জারি করেছে।’’
এদিন তেহট্ট -১ নম্বর ব্লক অফিসে বিজেপির কর্মসূচিতে স্কুল চলাকালীন মাইক বাজানো নিয়ে অভিযোগ ওঠে। এরপর স্মারকলিপি জমা দিতে গিয়ে বিডিও অফিসের মূল ফটকের সামনে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। সেখানে পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। বিজেপি কর্মীদের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে গেলে লোহার দরজার ধাক্কায় জখম হন এক কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। তাঁর হাতের আঙুল কেটে গিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতির সামনেই এই ঘটনা ঘটে।
[আরও পড়ুন: ‘ওদের ইডি, আমাদের দিদি’, একুশের মঞ্চে বিজেপিকে খোলা চ্যালেঞ্জ নতুন মুখের]
এদিন রাজারহাটে বিডিও ঘেরাও কর্মসূচির মিছিল শুরু হয় বিষ্ণুপুর বটতলা থেকে। এই কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। বিডিও অফিসের কাছাকাছি মিছিল আটকায় পুলিশ। ব্যারিকেড ভেঙে বিক্ষোভকারীরা ব্লক অফিসে ঢেকার চেষ্টা করে। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় বিজেপি কর্মীদের। অভিযোগ, উচ্ছৃঙ্খল এক গেরুয়া কর্মী বিধাননগর কমিশনারেটের নারী সুরক্ষা ‘উইনার্স’ বাহিনীর এক মহিলা পুলিশ কর্মীর হাতে আচমকাই কামড় দেয়। হুগলিতেও বিজেপির বিডিও অফিস ঘেরাও কর্মসূচির নামে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা হয় জেলাজুড়ে।
শ্রীরামপুর উত্তরপাড়া বিডিও অফিস ঘেরাও ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। মিছিল আটকালে পুলিশ ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি চলে। ব্যারিকেড ভেঙে এগনোর চেষ্টা করে বিক্ষোভকারীরা। দু’জন বিজেপি কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। সংসদের অধিবেশন চলায় এদিন রাজ্যের এই কর্মসূচিতে ছিলেন না সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষ, লকেট চট্টোপাধ্যায়রা। শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য ডায়মন্ড হারবারে অন্য একটি কর্মসূচিতে ছিলেন। শমীক ছিলেন রাজারহাটে, বিধায়ক মনোজ টিগ্গা মাদারিহাটে, সংখ্যালঘু মোর্চার সভাপতি চার্লস নন্দী ছিলেন বসিরহাটের হিঙ্গলগঞ্জে। এছাড়া, মালদহের চাঁচল, বর্ধমানের জামুরিয়া, বালুরঘাটেও বিজেপির কর্মসূচিকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। বীরভূমের খয়রাশোলে বিডিও অফিসে বিক্ষোভের পর স্মারকলিপি জমা দিতে গিয়ে চুড়ি উপহার দেন বিজেপি কর্মীরা। হাবড়ায় বিডিওকে কালো মিষ্টি আর গোলাপ দেওয়া হয়। কোচবিহারেও বিজেপি কর্মীরা উত্তেজনা ছড়ায় বলে অভিযোগ।