নন্দন দত্ত, সিউড়ি: প্রমাণ-সহ বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলল তারই দলের নেতাকর্মীরা। সোমবার সকালে দলের সিউড়ি জেলা কার্যালয়ের সামনে বীরভূম সাংগঠনিক জেলার নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ দেখায়। হাতে প্ল্যাকার্ড, মুখে স্লোগান,ব্যানারে ধ্রুব সাহা ও রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়ের ছবির উপর লাল কালিতে ঢ্যাঁড়া কাটা চিহ্ন দিয়ে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের মূল দাবি, সভাপতির পদ থেকে ধ্রুব সাহাকে সরাতে হবে। দলের পুরনো কর্মীদের দায়িত্ব দিয়ে ফের সংগঠনে ফেরাতে হবে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় ধ্রুব সাহা তাঁর দেহ রক্ষীদের নিয়ে তাঁরই দলের কার্যকর্তাদের দিকে তেড়ে যান। কর্মীদের অভিযোগ, তাঁদের মারধর করা হয়েছে, মাইকের তার ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও ধ্রুব সাহা দাবি করেন তেমন কিছু হয়নি। সকলেই দলের দায়িত্বশীল কার্যকর্তা। দপ্তরে বসিয়ে তাঁদের অভিযোগ শোনা হয়েছে।
তৃতীয়বার জেলা সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন ধ্রুব সাহা। পরপর দু’বার বীরভূম সাংগঠনিক জেলার দায়িত্ব পেয়েছেন। বীরভূম সাংগঠনিক জেলায় ৩৩ জন মণ্ডল সভাপতি আছে। তাঁদের মধ্যে ৮ জনকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু কার্যকর্তাকে কোনও দায়িত্বই দেওয়া হয়নি। এদিকে রবিবার দুবরাজপুরে জনসভার মাধ্যমে কার্যত লোকসভার প্রচার শুরু করে দেন জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। সোমবার সিউড়িতে রাজ্যের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ( সংগঠন) তথা দক্ষিণবঙ্গের দায়িত্বে থাকা সতীশ ধন্দ-সহ রাজ্য নেতৃত্বরা সাংগঠনিক বৈঠকে হাজির হন। সেই খবর পেয়েই বীরভূম সাংগঠনিক জেলার বিক্ষুদ্ধ নেতারা দলীয় দপ্তরের সামনে হাজির হন।
[আরও পড়ুন: তৃণমূলের সুরেই সরব কানহাইয়া, অধীরের গলায় মমতা বিরোধিতা, ফের প্রকাশ্যে কংগ্রেসের কোন্দল]
সোমনাথ ঘোষ,জগন্নাথ মণ্ডল, পবন বাগদি,মুকুল মুখোপাধ্যায়,উদয় হাজরা, বরুন বাগদি সহ কার্যকর্ত্তারা আচমকা হাজির হন। বিক্ষোভ সামাল দিতে জগন্নাথবাবু তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। দলীয় দপ্তরে গিয়ে সতীশ ধন্দ সহ রাজ্য নেতৃত্বের সামনে একটি স্মারকলিপি তুলে দেন। তাঁরা দাবি করেন পরপর তিনবার কেন ধ্রুব সাহা সভাপতি পদে রইলেন। জেলা থেকে বালি, পাথর পাচারের টাকা দলের চাঁদার নামে তুলে সভাপতি আত্মসাৎ করছেন। রাজ্য নেতারা বিক্ষুদ্ধদের জানান, তাঁরা জনসম্পর্কে মন দিন। এটা তাদের দেখার বিষয় নয়। বিক্ষুব্ধরা জবাব দেন, “তাহলে তৃণমূলের দূর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের নামতে বলছেন কেন? আপনারা কি দলের দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের আড়াল করতে চাইছেন?” রাজ্য নেতৃত্ব বিক্ষুব্ধদের দাবির সপক্ষে প্রমাণ চান। বিক্ষুব্ধরা দুর্নীতির প্রমাণ স্বরূপ বেশকিছু কাগজ রাজ্য নেতৃত্বের হাতে তুলে দেন। কী কারনে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা না করে নেতৃত্বকে সরিয়ে দেওয়া হল তাও জানতে চান।
বিক্ষুব্ধরা রাজ্য নেতৃত্বকে দশ দিনের সময় বেঁধে দেন। না হলে তাঁরা এবার কলকাতায় গিয়ে দলীয় দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ দেখাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। দু’ঘন্টা বৈঠক শেষ ধ্রুব সাহা জানান, “সকলেই দলের কাজ করতে চান। তৃণমূলকে হারিয়ে তৃতীয়বার মোদি সরকারকে আনতে চান। সকলকেই দায়িত্ব দেওয়া হবে।”