সংবাদ প্রতিদিন, ডিজিটাল ডেস্ক: রাজনৈতিক দলগুলির রোজগারের উৎস কোথায়? এ প্রশ্নে অনেকেরই। উত্তর খুঁজতে গেলে চক্ষু চড়ক গাছ হবে আপনারও। অ্যাসোশিয়েসন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস অর্থাৎ এডিআরের দেওয়া তথ্য বলছে, এদেশের রাজনৈতিক দলগুলির রোজগারের অর্ধেকই আসে অজানা উৎস অর্থাৎ নাম জানাতে অনিচ্ছুক ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট থেকে। সুকৌশলে রাজনৈতিক দলগুলি এই দাতাদের নাম প্রকাশ্যে আনে না। এডিআরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষে ৭১০ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা অজানা উৎস থেকে রোজগার করেছে রাজনৈতিক দলগুলি। উল্লেখযোগ্যভাবে এর বেশিরভাগই পেয়েছে বিজেপি। এডিআর জানাচ্ছে, নোট বাতিলের বছরে অজানা উৎস থেকে বিজেপির রোজগার ৫৩২ কোটি ২৭ লক্ষ টাকা। ঠিক তাঁর আগের বছরে অর্থাৎ ২০১৫-১৬ অর্থবছরে অজানা উৎস থেকে বিজেপির আয় ছিল মাত্র ৭৬ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা। নোট বাতিলের বছরে বিজেপির রোজগার প্রায় ৮ গুণ কীভাবে বাড়ল, সে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা।
[মহেশতলা দখলেই রাখল তৃণমূল, সিপিএমকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় বিজেপি]
ওই স্বশাসিত সংস্থাটিকে বিজেপি যে তথ্য দিয়েছে তাতে জানা যাচ্ছে, এই ৫৩২ কোটির অধিকাংশই এসেছে ২০ হাজার টাকা বা তারও বেশি চাঁদা দিয়েছেন এমন দাতাদের থেকে। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী কোনও রাজনৈতিক দলকে কেউ ২০ হাজার টাকার বেশি চাঁদা দিলে তাঁর নাম প্রকাশ করার প্রয়োজন হয় না। সাধারণত বড় বড় কর্পোরেট ব্যবসায়ীরা নিজের পছন্দের রাজনৈতিক দলকে এই পরিমাণ চাঁদা দিয়ে থাকেন। উল্লেখযোগ্যভাবে নোট বাতিলের বছরে মাত্র ১ হাজার ১৯৪ জন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তি বা সংস্থা বিজেপিকে এই বিপুল পরিমাণ চাঁদা দিয়েছে। এতেই স্পষ্ট প্রত্যেক ব্যক্তি বা সংস্থার কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা পেয়েছে গেরুয়া শিবির।
[উপনির্বাচনে দিকে দিকে বিজেপিকে ধাক্কা, কৈরানায় জয়ী মহাজোট]
তুলনায় অনেকটা পিছিয়ে কংগ্রেস। নোট বাতিলের বছরে অজানা উৎস থেকে কংগ্রেসের রোজগার ছিল ১১৫ কোটি টাকা। কংগ্রেসের এই রোজগার অবশ্য কর্পোরেট সংস্থার চাঁদা থেকে আসেনি। এসেছে দলীয় পুস্তিকা এবং সংবাদপত্র বিক্রির মাধ্যমে। কর্পোরেট সংস্থার চাঁদা কংগ্রেস আর সেভাবে পাচ্ছে না বললেই চলে। কর্পোরটদের চাঁদা থেকে যে পরিমাণ রোজগার বিজেপি করেছে তা অন্য সব জাতীয় দলের মোট রোজগারের ৯ গুণ। আপাতত নির্বাচন কমিশনের খাতায় জাতীয় দল হিসেবে নথিভুক্ত আছে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, এনসিপি সিপিএম এবং সিপিআই। এই সব দলগুলির অজানা উৎসের রোজগার মেলালেও বিজেপির ধারেকাছে আসে না।
[হোয়াটসঅ্যাপকে টেক্কা দিতে গিয়েও ধাক্কা, প্লে-স্টোর থেকে উধাও রামদেবের মেসেজিং অ্যাপ]
এদিকে, এডিআরের রিপোর্ট পেশের পরই বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করছে বিরোধীরা। তাদের দাবি, নোট বাতিল করে কর্পোরেট সংস্থাগুলির সুবিধা করে দিয়েছে বিজেপি। প্রচুর পরিমাণ কর্পোরেট ঋণও মকুব করেছে সরকার। যার ফলে সুবিধা পাচ্ছে বড় বড় কোম্পানিগুলি। তারই প্রতিদানে বিজেপিকে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা অনুদান দিচ্ছে সংস্থাগুলি। অনেকে আবার অভিযোগ করছে, নোট বাতিলের সময় নিজেদের সমস্ত কালো টাকা বিজেপিকে দান করেছে কর্পোরেট সংস্থাগুলি, আর সে কারণেই ফুলে ফেঁপে উঠছে গেরুয়া শিবির।
The post নোট বাতিলেই লক্ষ্মীলাভ! অজানা উৎস থেকে সবথেকে বেশি আয় বিজেপিরই appeared first on Sangbad Pratidin.