অভিরূপ দাস: আদতে অসুখ বাড়ির লোক ভাবলেন অত্যাচার! শুধু ভাবলেনই না নালিশ ঠুকলেন থানায়। গোটা ঘটনায় হতবাক ওই হাসপাতাল। করোনা নিয়ে দক্ষিণ কলকাতার পদ্মপুকুরে হেলথ পয়েন্ট নার্সিংহোমে ভরতি হয়েছিলেন তাপসকুমার বীর (৮৫)। ছুটি হওয়ার পর অবাক রোগীর কন্যা! সারা গায়ে কালশিটের দাগ। হাসপাতালে বাবাকে মারধর করা হয়েছে! বালিগঞ্জ থানায় হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে রোগীর পরিবার। শহরের বেসরকারি হাসপাতালে প্রৌঢ় রোগীকে মারধর! ভয়ংকর এই অভিযোগ পেয়ে রোগীর অবস্থা খতিয়ে দেখতে চায় রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন। দেখা যায় সত্যিই রোগীর গায়ে কালশিটে (Black Patches)। তবে তা উত্তম-মধ্যমের জন্য নয়। বরং এটা করোনারই একটা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া।
স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কোভিড-১৯ রোগে রক্তবাহী নালির কোষগুলোর ভেতরের আবরণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর জের অনেক দিন ধরে চলতে থাকে। সেল ক্ষতিগ্রস্ত হলে এর আবরণের টিস্যুগুলো সৃষ্ট ক্ষত সারিয়ে তোলার জন্য একধরনের প্রোটিন তৈরি করে। এর কাজ হল রক্তের সঙ্গে মিশে কিছু রক্ত জমাট বেঁধে ফেলার ব্যবস্থা করা। যাতে ক্ষতিগ্রস্ত সেল রক্তপ্রবাহের কারণে আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে না পারে। এমনটা হয়েছিল পঁচাশি বছরের তাপসকুমার বীরেরও। তাঁর সারা গায়ে তাই কালশিটের মতো দাগ দেখা গিয়েছিল। তাপসবাবুর একমাত্র মেয়ে নন্দিনী ভিনদেশের বাসিন্দা। অশীতিপর তাপসবাবুকে দেখভাল করেন আয়া। গত ৩১ অক্টোবর কোভিড (Covid-19) নিয়ে আয়ার হাত ধরেই হেলথ পয়েন্টে যান তাপসবাবু। টানা ১৭ দিন সেখানেই ভরতি ছিলেন।
[আরও পড়ুন: বাংলা দখলে মরিয়া বিজেপি, ২ দিনের সফরে কলকাতায় পৌঁছলেন অমিত শাহ]
এদিকে হাসপাতালের বিরুদ্ধে রোগীকে মারধরের অভিযোগের পর বিস্মিত হেলথ পয়েন্টের কর্তারা। তাঁদের কথায়, “রোগীকে মারধর করব কেন? আমরা তো চিকিৎসা করেছি।” রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের চেয়ারম্যান অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা জানতে পেরেছি এটা আদৌ কোনওরকম মারধর করার জন্য হয়নি, বরং কোভিডেরই একটা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় রক্ত জমাট বেঁধে গিয়েছিল। ওনার মেয়ের সঙ্গে অনলাইন ভিডিও কলে আমাদের কথা হয়েছে। তবে হাসপাতালের উচিত ছিল ওই জায়গায় থ্রম্বোফব লাগিয়ে শ্রুশুষা করে দেওয়া।