shono
Advertisement

শ্বাসনালীর গঠন অসম্পূর্ণ, আজন্ম নীলাভ শিশুকে নতুন জীবন দিল এসএসকেএম

কঠিন অস্ত্রোপচারেই কাটল আশঙ্কার মেঘ।
Posted: 11:54 AM Oct 30, 2022Updated: 12:00 PM Oct 30, 2022

স্টাফ রিপোর্টার: জন্ম থেকেই নীল। তাকে নতুন জীবন দিল এসএসকেএম (SSKM)। মাস দুয়েক আগের কথা। নীলরতন সরকার মেডিক‌্যাল কলেজে (NRS) মালদহের (Malda) দম্পতির কোল আলো করে এসেছিল শিশুকন‌্যা। কেঁদেই চলেছে। খেতে পারছে না কিচ্ছু। যখনই কাঁদছে বুকের মাঝখানের অংশটা ঢুকে যাচ্ছে ভেতরে। পরীক্ষা নিরীক্ষা করে চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন ল‌্যারিঙ্গোম‌্যালেশিয়া।

Advertisement

কী এই অসুবিধা? সাধারণত প্রিম‌্যাচিওর বেবি বা অপরিণত শিশুদের শ্বাসনালীর উপরের গঠন ঠিকমতো সম্পূর্ণ হয় না। অত‌্যন্ত নরম সে অংশটা কাঁদার সময় বা নিশ্বাস নেওয়ার সময় চুপসে ভেতরের দিকে ঢুকে যায়। অধিকাংশ শিশুর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ঠিক হয়ে যায়। উপুড় করে শুইয়ে দিলেও সমস‌্যা ধীরে ধীরে কমে। কিন্তু এই শিশুটি তার ব‌্যতিক্রম। সেভাবে শুইয়েও লাভ হচ্ছিল না।

[আরও পড়ুন: গোটা শরীর রক্তমাখা, বাঁ হাতে কাটা ডান হাত, মগরায় ছিনতাইবাজের দৌরাত্ম্যে অঙ্গহানি প্রৌঢ়ের]

জন্ম থেকেই নিম্নমুখী ছিল অক্সিজেন স‌্যাচুরেশন। শ্বাসকষ্ট এতটাই, নীল হয়ে যাচ্ছিল তুলতুলে শরীরটা। খেতেও পারছিল না কিচ্ছু। স্বাভাবিক ভাবেই ঠাঁই হয় নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে। এভাবে কতদিন? চিকিৎসকরা দেখেন উপায় একটাই। জটিল এক অস্ত্রোপচার করে বাঁচানো যাবে শিশুটিকে। ট্রান্সসার্ভিকাল এপিগ্লটোপ্লাস্টি। কিন্তু সে অস্ত্রোপচারের যন্ত্র নেই নীলরতন সরকার মেডিক‌্যাল কলেজে। এসএসকেএম হাসপাতালের ইন্সটিটিউট অফ অটো রাইনো ল‌্যারিঙ্গোলজি হেড অ‌্যান্ড নেক সার্জারি বিভাগ এখন দেশের মধ্যে অন‌্যতম সেরা উৎকর্ষ কেন্দ্র। ডিরেক্টর ডা. অরুণাভ সেনগুপ্তর প্রচেষ্টায় সে যন্ত্র এসেছে প্রতিষ্ঠানে। খবর যায় ইন্সটিটিউট অফ অটো রাইনো ল‌্যারিঙ্গোলজি হেড অ‌্যান্ড নেক সার্জারি বিভাগে।

তৈরি হয় মেডিক‌্যাল বোর্ড। নীলরতনে শিশুটিকে দেখতে যান প্রফেশর ডা. দেবাশিস বর্মন। এসএসকেএম এর চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, চিকিৎসা পরিভাষায় এ অসুখের নাম সিভিয়ার ইনট্র‌্যাক্টটেবল ল‌্যারিঙ্গো ম‌্যালেশিয়া। জন্ম থেকেই সূর্যের আলো দেখা হয়নি একরত্তির। তাঁকে বাঁচাতে অপারেশনের ব্লু প্রিন্ট তৈরি করেন চিকিৎসকরা। অস্ত্রোপচার টিমে ছিলেন ডা. দেবাশিস বর্মন, ডা. শুভদীপ করঞ্জাই, ডা. সৌত্রিক কুমার। অ‌্যানাস্থেশিস্টের ভূমিকায় ছিলেন ডা. অনির্বাণ দাস, ডা. কবীর হুসেন, ডা. মেঘা চট্টোপাধ‌্যায়। শ্বাসনালীর যে অংশটা ঢুকে যাচ্ছে, সেটাকে বাইরে থেকে জিভের সঙ্গে সেলাই করে দেওয়া হয়। রাখা হয় কড়া পর্যবেক্ষণে।

[আরও পড়ুন: ‘বিদেশ থেকে গরু আমদানির মতো চাহিদা নেই বাংলাদেশে’, বিস্ফোরক তথ্যমন্ত্রী হাছন মাহমুদ]

এরপর নল দিয়ে খাওয়ানো হচ্ছিল শিশুটিকে। অস্ত্রোপচারের দু’সপ্তাহ পর কেটে দেওয়া হয় সেলাই। অস্ত্রোপচারের পর শিশুটিকে কড়া পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে। ডা. সুচন্দ্রা মুখোপাধ‌্যায়ের তত্ত্বাবধানে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে শিশুটি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement