নন্দন দত্ত, সিউড়ি: সাতসকালে সাধুর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে শোরগোল সিউড়ির (Suri) পুরন্দরপুরের বেহেরা কালীতলায়। মৃতের নাম স্বামী ভবানন্দ ওরফে ভুবন মণ্ডল। তাঁকে কেউ বা কারা খুন করে দেহ ঝুলিয়ে রেখেছে বলে অভিযোগ পরিবারের। যদিও পুলিশের দাবি, মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি সুইসাইড নোট (Suicide Note) ও সোনার আংটি। সাধুর এহেন মৃত্যুতে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রবল উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে মন্দির সংলগ্ন জঙ্গলের ভিতরে বসবাসকারী এক সাধিকাকে আটক করেছে সিউড়ি থানার পুলিশ। তবে সাধুর মৃত্যুতে রহস্য ঘনিয়েছে। আদৌ তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন নাকি হত্যা করা হয়েছে, তার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। সিবিআই তদন্তের দাবি করেছে পরিবার। জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানান, ”দাদার অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পরে তদন্তের দিশা ঠিক করা হবে।”
মৃত ভুবন মণ্ডল ওরফে স্বামী ভবানন্দ খয়রাশোলের পাঁচড়া গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর দাদা জীবন মণ্ডল জানাচ্ছেন, ১০-১২ বছর আগেই ভাই সাধু (Monk) হয়ে যান। বাড়ি ছেড়ে পুরন্দরপুরের বিল্ববাসিনী মন্দির সংলগ্ন এলাকায় এসে বসবাস করতে থাকেন। এলাকায় তিনি যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করছিলেন, ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছিলেন। সেই কারণে বিল্ববাসিনী মন্দির কমিটির সদস্যদের বিরাগভাজন হয়ে পড়ছিলেন বলে অভিযোগ করেন দাদা। তাঁর অভিযোগ, সেই কারণেই তাঁর ভাইকে খুন করা হয়েছে। তিনি মন্দির কমিটির সদস্য কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সিউড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
[আরও পড়ুন: ‘আমার বাড়িতে তুলিতে হাতেখড়ি’, শচীনকে নিয়ে অভিজ্ঞতার কথা জানালেন শিল্পী সনাতন দিন্দা]
তবে তাঁর মৃত্যু নিয়ে ঘনিয়েছে রহস্য। জানা যাচ্ছে, মাস তিনেক আগে তারাপীঠ থেকে এক সাধিকা আসেন পুরন্দরপুরে। মন্দির সংলগ্ন জঙ্গলে একটি কুটির বেঁধে থাকতেন। সেখানে মাঝেমধ্যে থাকতেন স্বামী ভবানন্দও। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেই কুটিরে গভীর রাত পর্যন্ত মদ্যপান-সহ একাধিক অসামাজিক কাজকর্ম হত। সেই কারণে ওই সাধিকার উপর ক্ষুব্ধ ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁর কুটিরে ভাঙচুরও করা হয়েছে। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই মহিলাকে আটক করেছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: হনুমান জয়ন্তীতে আইন-শৃঙ্খলা ভালই সামলেছে রাজ্য, পুলিশের প্রশংসা কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা কর্তাদের মুখে]
এদিকে, পুলিশের দাবি, মৃতদেহের পাশ থেকে সুইসাইড নোট ও সোনার আংটি উদ্ধার হয়েছে। তাতে লেখা, আংটি বিক্রি করে তাঁর সৎকার করা হোক। যদিও মৃতের দাদার দাবি, ওই হাতের লেখা তাঁর ভাইয়ের নয়। তাঁকে খুন করে বিষয়টি সাজানো হচ্ছে। পুলিশ সব দিকে খতিয়ে দেখে তদন্তে নেমেছে।