সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: মহেশতলায় (Mahestala) বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের জেরে দুই শিশু-সহ তিনজনের পুড়ে মৃত্যুর ঘটনায় সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যাচ্ছে, মৃতা সোমা মণ্ডলের লিভ-ইন পার্টনার ছিল মূল অভিযুক্ত প্রভাস মণ্ডল। টাকাপয়সা চাওয়া নিয়ে প্রায়ই সোমার উপর চাপ দিত সে। সেই অশান্তি থেকেই পুড়িয়ে মারা হয়েছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতার ভাই। তার ভিত্তিতেই পুলিশ বধূ নির্যাতন ও খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মূল অভিযুক্ত প্রভাস মণ্ডলকে।
আক্রার কৃষ্ণনগর পূর্ব মণ্ডল পাড়ার একটি বাড়িতে শনিবার মাঝরাতে আগুন (Fire) লাগে। পুড়ে মৃত্যু হয় বাড়ির দুই ছোট সদস্য ও মহিলার। দমকল কর্মীরা আগুন নেভানোর পর ভিতর থেকে বছর সাতচল্লিশের সোমা মণ্ডল এবং তাঁর বড় ছেলে সাহেব ও ছোট ছেলে রাহুলের দগ্ধ দেহ উদ্ধার করে। সোমার স্বামী বলে যার কথা প্রথমে ভাবা হয়েছিল, সেই প্রভাস মণ্ডল বাড়িতে ছিলেন না। তিনি নিজের সবজির দোকানে রাত কাটিয়েছিলেন। প্রতি রাতেই তিনি সবজির দোকানেই থাকতেন। পরে জানা যায়, সোমার স্বামী নন প্রভাস। তাঁরা লিভ-ইন (Live-in)সম্পর্কে ছিলেন।
[আরও পড়ুন: আসানসোলের জেতা আসনে হার কেন? ক্ষুব্ধ শাহ-নাড্ডা, অমিতাভ চক্রবর্তীকে তলব দিল্লিতে]
২০১৫ সালে সোমার স্বামী টোটন মণ্ডলের মৃত্যুর পর থেকে দুই সন্তানকে নিয়ে মহেশতলার এই বাড়িতে প্রভাসের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন সোমা। প্রভাস আদতে চেতলার বাসিন্দা। বাসচালক ছিলেন। লকডাউনের সময় চাকরি খোয়ায় সে। তারপর থেকে সবজির ব্যবসা শুরু করেন। সবজির দোকানেই রাতে থাকত প্রভাস। শনিবার রাতেও বাড়িতে ছিল না। রাতে বাড়িতে আগুন লেগে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। এরপর মৃতা সোমার ভাই গৌতম দাস পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, প্রভাস বধূ নির্যাতন চালাত। আগুনে পুড়িয়ে খুন করেছে।
[আরও পড়ুন: সাধারণের উপরে বাড়তে পারে করের বোঝা! তুলে দেওয়া হচ্ছে জিএসটির ৫ শতাংশের ধাপ]
ঘটনা নিয়ে ডায়মন্ড হারবার (Diamond Harbour) পুলিশ জেলার এসপি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, ”মৃত গৃহবধূর ভাই প্রভাসের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতন ও পুড়িয়ে মারার অভিযোগ দায়ের। তাই সেই ধারায় মামলায় রুজু হয়েছে। অভিযুক্ত আটক করা হয়েছে। গতকালের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি।” তবে ঘটনায় বেশ কিছু রহস্য রয়ে যাচ্ছে। ঘরটি তালাবন্ধ ছিল। তা বাইরে থেকে বন্ধ করা হয়েছিল নাকি ভিতর থেকেই বন্ধ ছিল, সে বিষয়ে এখনও অজানা। রান্নাঘরের সিলিন্ডার লিক করতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু তা বিস্ফোরণ হয়নি। সেটাই বা কীভাবে সম্ভব, সংশয় রয়েছে তা নিয়েও।