সংবাদ প্রতিদিন-এর হয়ে কলম ধরেছেন রোমারিও:
জানি না কেন, লোকে হঠাৎই ১৯৬৬-র বিশ্বকাপ টেনে কথা বলতে শুরু করেছে। শেষ ওই ’৬৬ বিশ্বকাপেই গ্রুপ টপকাতে ব্যর্থ হয়েছিল ব্রাজিল। তারপর থেকে যে ক’টা বিশ্বকাপ হয়েছে, আমরা অন্তত দ্বিতীয় রাউন্ড গিয়েছি। বেশির ভাগ সময়ই গ্রুপ-সেরা হয়ে। লোকে কি সত্যিই ভাবছে ব্রাজিল প্রথম রাউন্ড পেরোতে পারবে না? এটা ঠিক, টিমগুলো যে ভাবে যে পজিশনে আছে, তাতে সম্ভাবনা নিশ্চয়ই আছে। সার্বিয়ার কাছে যদি বুধবার ব্রাজিল হেরে যায়, তা হলে ব্রাজিল ছিটকে যেতে পারে বিশ্বকাপ থেকে। কারণ সুইজারল্যান্ড আবার কোস্টা রিকার তুলনায় অনেক শক্তিশালী টিম। কোস্ট রিকাকে ওরা হারিয়ে দিলে আর ব্রাজিল হেরে গেলে তখন সুইজারল্যান্ডই গ্রুপ টপ করবে। ব্রাজিল সেক্ষেত্রে ছিটকে যাবে। কিন্তু আমার মনে হয় না ব্রাজিল ওসব নিয়ে ভাবছে বলে।
[ ভগবানের উচ্ছ্বাসের দিনে ক্যালেন্ডারে লাল দাগ থাকে না… ]
ব্রাজিল এতদিন টিটের কোচিংয়ে যে ভাবে খেলেছে, সেভাবেই আজ ওদের খেলা উচিত। মানছি, সুইজারল্যান্ডকে প্রথম ম্যাচে ব্রাজিল হারাতে পারেনি। তার পরও যে দারুণ খেলছে, তা নয়। কিন্তু ব্রাজিল ভালভাবে কামব্যাক করেছে টুর্নামেন্টে। অনেক বেশি লড়েছে, সুযোগ তৈরি করেছে, আর শেষ পর্যন্ত কোস্টা রিকার শক্তিশালী ডিফেন্সকে ভেঙে ফেলেছে। আমার মনে হয়, আগের ম্যাচটা জিতে যাওয়ায় সার্বিয়ার বিরুদ্ধে ব্রাজিল সর্বাত্মক ঝাঁপাবে। খুনে পারফরম্যান্সটা বের করে আনবে। নিঃসন্দেহে সার্বিয়া ম্যাচ কঠিন হবে ব্রাজিলের। বিশ্বকাপের আগে ব্রাজিলের গ্রুপটা নিয়ে কেউ কিছু বলেনি। কিন্তু বিশ্বকাপের শুরুতেই দুটো ইউরোপীয় দলকে সামলানো সহজ নয়। বরং বেশ কঠিন। সার্বিয়া আগে যুগোস্লাভিয়ার অংশ ছিল। তাই ওদের ফুটবল সংস্কৃতি উন্নত। ওদের খেলায় গতি আছে। ছোট ছোট পাস খেলতে পারে। সার্বিয়াকে পরের রাউন্ডে যেতে হলে শেষ ম্যাচটা জিততেই হবে। আর তাই ব্রাজিলের কালঘাম বার করে দিলে আমি অবাক হব না।
[ নেতা মেসি বোঝালেন, এভাবেও ফিরে আসা যায়… ]
সার্বিয়া ম্যাচ ড্র করলেই পরের রাউন্ডে চলে যাবে ব্রাজিল। কিন্তু কী জানেন, ড্রয়ের ভাবনা নিয়ে নামলে অনেক সময় কপালে হার লেখা থাকে। ব্রাজিল সবচেয়ে ভাল করবে, পরিণতির কথা না ভেবে স্রেফ জেতার জন্য নামলে। ব্রাজিলের টিম যা, নিজেদের দিনে যে কাউকে ওরা হারিয়ে দিতে পারে। দু’টো ম্যাচে দু’টো গোল করেছে কুটিনহো। শেষ ম্যাচে নেইমারও গোল পেয়েছে। ব্রাজিলের অনেক প্লেয়ারকে দেখে মনে হচ্ছে, যে কেউ যে কোনও সময় গোল করে দেবে। ফিনিশিংটা যদি ব্রাজিলের একটু ভাল হয়, ওদের থামানো খুব কঠিন। শুধু ব্রাজিল ডিফেন্সকে বলব, একটু সতর্ক থাকতে। সার্বিয়ার বিরুদ্ধে নিচে দাঁড়িয়ে ডিফেন্স করে গেলেই হবে না। সার্বিয়া প্রচুর আক্রমণ তুলে আনতে চাইবে। আমাদের মিডফিল্ড প্লে তাই ভাল হওয়া দরকার। সার্বিয়া অ্যাটাককে মাঝমাঠে ভেঙে দিতে হবে। কোনও জায়গা দেওয়া যাবে না। আমার মত, প্রথম দু’ম্যাচে যে চ্যালেঞ্জের সামনে পড়েছে টিটের টিম, বুধবার তার চেয়ে অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে চলেছে। ডিফেন্সে ডিসিপ্লিন, পজিশনে থাকা, নিজেদের খেলার শেপ ধরে রাখা–এই তিনটি জিনিস খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। আমি তো বলব, ক্যাসেমিরোর উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। রিয়াল মাদ্রিদ মিডফিল্ডে ও সম্পদ। এ বার ব্রাজিল জার্সিতেও নিজের সেরাটা বের করে আনতে হবে ওকে। ব্রাজিল ডিফেন্স যদি ভাল খেলে, তা হলে ম্যাচেও ভাল করবে টিমটা। দলটা নিজেদের মধ্যে মিশতে শুরু করেছে। নেমারকেও পুরো ফিট দেখাচ্ছে। ওকে প্রচুর চাপ সহ্য করতে হয়েছে বিশ্বকাপের প্রথম থেকে। বিশেষ করে মিডিয়া নেইমারকে নিয়ে অনেক কিছু বলেছে, লিখেছে। কোস্টা রিকার বিরুদ্ধে পাওয়া গোলটা ওকে কিছুটা হলেও হালকা করবে। নেইমার আমাদের টিমের সেরা প্লেয়ার। কিন্তু দেখতে হবে, ও যেন সেরা সাপোর্টটাও পায়। ব্রাজিলের সময় এসেছে বিশ্বকে বোঝানোর যে, ওরা শুধু একটা ভাল টিম নয়। ব্রাজিল কাপ জেতার ফেভারিট।
The post সার্বিয়ার বিরুদ্ধে নিজেদের খুনে পারফরম্যান্স বের করে আনতে পারবেন নেইমাররা? appeared first on Sangbad Pratidin.