সন্দীপ চক্রবর্তী: আগামী ২০ এবং ২১ এপ্রিল অর্থাৎ বুধ এবং বৃহস্পতিবার নিউটাউনের বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে বসতে চলেছে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের (BGBS) আসর। আর সেই সম্মেলন শুরুর চারদিন আগেই ব্রিটেন জানিয়ে দিল, লগ্নির গন্তব্য বাংলাই। এযাবৎ কালের সর্ববৃহৎ প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছে ব্রিটেন, যে দলে থাকবেন তাবড় শিল্পপতি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্তারা।
সূত্রের খবর, ব্রিটেনের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে শিক্ষা ও গবেষণায় বাংলার সরকারের ও কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মৌ সই হবে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে গবেষণামূলক কাজের আদানপ্রদানেও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বাণিজ্য সম্মেলনে। যার ফলে ব্যাপক উপকৃত হবেন ছাত্রছাত্রীরা। আমেরিকা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইটালি ও চিনের প্রতিনিধিরাও মুখিয়ে বাংলায় বিনিয়োগে। দু’একদিনেই তাঁরা বিস্তারিত জানাবেন। বস্তুত, দেশের শীর্ষস্তরের শিল্পপতিরা ছাড়াও বিদেশ থেকে লগ্নির প্রস্তাব এখনই আসতে শুরু করেছে। বাংলা নতুন বছর যে বিনিয়োগের বছর হিসাবেই গণ্য হবে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত শিল্প দপ্তরের আধিকারিকরাও।
[আরও পড়ুন: তৃণমূল সুপ্রিমোর আহ্বানে সাড়া, অবিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের একজোট করে বৈঠকের উদ্যোগ শিব সেনার]
করোনা আবহ কাটানোর পর বাংলাতেই দেশের মধ্যে প্রথম এমন সম্মেলন হতে চলেছে। অনেকটা সে কারণেও শিল্পপতিদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে বাংলাই। গতবার ৩৫টি দেশের মোট প্রতিনিধির সংখ্যা ছিল প্রায় চার হাজার। এর মধ্যে বিদেশি প্রতিনিধির সংখ্যা ৪৫০। এবার সেই সংখ্যা বাড়ছে, প্রাথমিকভাবে এমনটাই খবর। রেজিস্ট্রেশন পর্ব অবশ্য চলছেই। আগের পাঁচটি সম্মেলনে সব মিলিয়ে প্রায় ১২ লক্ষ ৩৬ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ এসেছে বঙ্গে।
ব্রিটেন থেকে ৪৯ জনের সিনিয়র প্রতিনিধি আসবেন বলে রবিবারই ব্রিটিশ ডেপুটি হাইকমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে। বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্সের সঙ্গে ‘বিজনেস টু বিজনেস’ অর্থাৎ বি টু বি মিটিং করবেন তাঁরা। মূলত শিক্ষা, উদ্ভাবনী বা গবেষণায় বাংলার সঙ্গে যৌথভাবে কাজে গুরুত্ব দিচ্ছে ব্রিটেন। কলকাতায় ব্রিটিশ ডেপুটি হাই কমিশনার নিক লো বলেছেন, “ভারতের সঙ্গে শিল্প ও বাণিজ্য সমঝোতা বাড়াতে গত মে মাসে রোড ম্যাপ তৈরি করে দিয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন (Boris Johnson)। বাংলার সঙ্গে আরও বেশি বাণিজ্যস্থাপনে আগ্রহী ব্রিটেন। এর মধ্যেই ৩০ হাজার কর্মসংস্থান হয়েছে শুধুমাত্র কলকাতাতেই। যুক্তরাজ্যের সংস্থাগুলি বাংলায় বিনিয়োগ প্রবলভাবে বাড়াতে আগ্রহী। তেমনভাবেই যে সংস্থা ভারতের অন্যত্র ব্যবসা করছে, তারা এবার কলকাতায় পা রাখতে চান।” তিনি অত্যাধুনিক কনভেনশন সেন্টার ও সম্প্রতি খুলে দেওয়া বিশ্ব বাংলা মেলা প্রাঙ্গণের উল্লেখ করে লিখেছেন, বাংলা মানেই বিজনেস। শিক্ষা, পর্যটন ও কলা-সংস্কৃতি ছাড়াও সৃজনশীল অর্থনীতিতে গুরুত্ব দিতে চাইছে ব্রিটেন।