ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: বকেয়া আদায়ে ‘দিল্লি চলো’ কর্মসূচিতে একাধিকবার পুলিশি অত্যাচারের মুখে পড়েছেন তৃণমূলের (TMC) জনপ্রতিনিধি ও ১০০ দিনের কাজের বঞ্চিতরা। বিশেষত মঙ্গলবার রাতে কৃষি ভবনে অবস্থানরত তৃণমূল সাংসদ, বিধায়কদের দিল্লি পুলিশের (Delhi Police) তরফে রীতিমতো হেনস্তা করে বের করে দেওয়া, মহিলাদের গায়ে হাত দেওয়ার মতো অমানবিক আচরণের ছবি দেখেছে গোটা দেশ। সাক্ষাতের সময় দিয়ে অপেক্ষা করানোর পর শেষমেশ কেন্দ্রীয় কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি কথা রাখেননি। সাক্ষাৎপ্রার্থীদের সঙ্গে দেখাই করেননি তিনি। এর পরই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নেতৃত্বে যাওয়া দলকে জোর করে কৃষি ভবন থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে, যা যথেষ্ট নিন্দনীয়। এর প্রতিবাদে এবার রাজ্যে বড়সড় আন্দোলন সংগঠিত করে তুলছে শাসকদলের বিভিন্ন সংগঠন। ছাত্র থেকে যুব সংগঠন তো বটেই, টাউন স্তরেও প্রতিবাদ মিছিল, কুশপুতুল দাহ-র মতো কর্মসূচি চলবে আজ দিনভর।
যুব তৃণমূলের তরফে মঙ্গলবার রাতেই বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ”আজ কৃষি ভবনে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ-এর সময় থাকা সত্ত্বেও সাড়ে তিন ঘন্টার উপর আমাদের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সহ মাননীয় মন্ত্রী, মাননীয় সাংসদদের বসিয়ে রাখা হয়। যে মন্ত্রী আজ বিকেল ৪ টের সময় বিজেপির প্রতিনিধির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, কিন্তু অ্যাপয়েন্টমেন্ট থাকা সত্ত্বেও আমাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ না করেই বেরিয়ে যান এবং তারপরে অমিত শাহের পুলিশ যে বর্বরোচিত আচরণে আমাদের মাননীয় মন্ত্রী, সাংসদ ও সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে গ্রেপ্তার করেছে, মহিলা ও বয়স্ক সাংসদেরও রেয়াত করেননি, তার প্রতিবাদে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের ও ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে যৌথ প্রতিবাদ কর্মসূচি। আগামিকাল প্রতিটি ব্লকে বিজেপির এই ন্যক্কারজনক, বর্বরোচিত আচরণের প্রতিবাদে মিছিল-সহ নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ ও গিরিরাজ সিংয়ের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হবে। পরশু রাজভবন অভিযান।”
যদিও মঙ্গলবার দিল্লি থেকে এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রাতেই কয়েকটি জেলায় প্রতিবাদে নেমেছিলেন তৃণমূল কর্মী, সমর্থকরা। কাঁথি (Kanthi) শহরের রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ চলে তৃণমূলের। বুধবার বিকেলে কলকাতায় পথে নামছে তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসও। বিকেল ৫ টায নাগাদ ঢাকুরিয়ার দক্ষিণাপনের সামনে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যর নেতৃত্বে হবে মিছিল। তার আগে দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে হবে প্রতিবাদ মিছিল। আজ সমস্ত ওয়ার্ডে ও ব্লকে তৃণমূলের প্রতিবাদ সভা রয়েছে।
এদিকে, দিল্লিতে কৃষি ভবনে হামলার প্রতিবাদে আগামী ৫ অক্টোবর রাজভবন (Rajbhaban) অভিযানে নামছে তৃণমূল। দিল্লি থেকেই তার রূপরেখা ঠিক করে দিয়েছেন মেয়র তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। তাঁর নির্দেশ, কলকাতার সমস্ত তৃণমূল কাউন্সিলরকে ২ হাজার করে কর্মী ও সমর্থক নিয়ে রাজভবনের উত্তর গেটে ওই দিন দুপুর ২ টায় পৌঁছতে হবে। সবমিলিয়ে দিল্লির পর এবার কেন্দ্র বিরোধী বিক্ষোভে ঝড় উঠতে চলেছে রাজ্যের বিভিন্ন শহরে।