সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যৌন নির্যাতনের ঘটনায় মুখ বন্ধ রাখতে টাকা দিয়েছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পার। নির্যাতিতা নাবালিকা ও তার মায়ের হাতে টাকা গুঁজে দিয়ে এই ঘটনায় চুপ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। ৮১ বছর বয়সি কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে এমনটাই দাবি করল সিআইডি। এই ঘটনায় ইয়েদুরাপ্পার পাশাপাশি তাঁর সহযোগী আরও ২ জনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ড সংহিতা অনুযায়ী একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আদালতে সিআইডির তরফে পেশ করা চার্জশিটে জানানো হয়েছে, চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি সকাল ১.১৫ নাগাদ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পার বাড়িতে গিয়েছিলেন ১৭ বছর বয়সি নাবালিকা ও তার মা। তদন্তকারীদের দাবি, এক যৌন নির্যাতন মামলায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পার সাহায্য চাইতে গিয়েছিলেন তাঁরা। নির্যাতিতার মায়ের সঙ্গে কথা বলার সময় মেয়েটির হাত ধরে বসেছিলেন ইয়েদুরাপ্পা। এর পর নির্যাতিতার হাত ধরে অন্য ঘরে নিয়ে গিয়ে দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করেন তিনি। ঘরের ভেতর নির্যাতিতাকে প্রশ্ন করা করে যারা যৌন নির্যাতন করেছে তাদের সে চেনে কিনা? কথার মাঝেই ওই নাবালিকার যৌন নির্যাতনের চেষ্টা করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
[আরও পড়ুন: ‘ষড়যন্ত্র করে ৫ মাস আটকে রেখেছিল’, জেল থেকে বেরিয়েই তোপ হেমন্তের]
সেই অবস্থায় ভীত সন্ত্রস্ত নাবালিকা ইয়েদুরাপ্পার হাত ছাড়িয়ে নিয়ে তাঁকে দরজা খুলতে বলে। এর কিছুক্ষণ পর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দরজা খুলে পকেট থেকে কিছু টাকা বের করে নির্যাতিতার হাতে দেন। এবং কোনও সাহায্য তিনি করবেন না বলে জানান। একইভাবে কিছু টাকা ধরানো হয় নির্যাতিতার মায়ের হাতে। এর পর ২০ ফেব্রুয়ারি এই সংক্রান্ত এক ভিডিও নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেন নির্যাতিতার মা। সেই ঘটনার পর নির্যাতিতার বাড়িতে হাজির হয় অরুণ ও রুদ্রেশ নামে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর দুই সহযোগী। মেয়েটির মাকে নির্দেশ দেওয়া হয় সোশাল মিডিয়া থেকে ওই ভিডিও মুছে দেওয়ার জন্য। এবং মুখ বন্ধ রাখার জন্য ২ লক্ষ টাকা নগদে দেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: ‘পলটুরাম’ নীতীশে ক্ষুব্ধ বিহার বিজেপি! বিধানসভায় একা লড়ার দাবি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর]
উল্লেখ্য, এই মামলায় নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে ১৩ জুন আদালত ইয়েদুরাপ্পার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারির নির্দেশ জারি করে। যদিও ১৪ জুন কর্নাটকের উচ্চ আদালত গ্রেপ্তারির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। পাশাপাশি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে আদালতে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দেয়। এই সব কিছুর মাঝেই গত মাসে ক্যানসারের কারণে মৃত্যু হয় নির্যাতিতার মায়ের। চলতি মাসে নির্যাতিতার ভাই ন্যায়বিচারের দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হয়। এবং ইয়েদুরাপ্পার গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। অন্যদিকে, নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ খারিজের দাবিতে আদালতে পালটা মামলা করেন ইয়েদুরাপ্পা।