রমেন দাস: মহাপ্রস্থানের পথে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। শববাহী গাড়ি চলছে ধীরে ধীরে। মাঝে মাঝে সামনের কাচ ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে চালকের। চোখ মুছে ফের মন দিচ্ছেন রাস্তায়। তাঁর উপরেরই দায়িত্ব প্রিয় 'বুদ্ধবাবু'কে শেষ গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার। শেষ যাত্রায় বুদ্ধের সারথী সমর্থক অঞ্জন বোস। গাড়িতে লাল ঝান্ডা লাগানো। অল্পবিস্তর ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। চারদিকে দলীয়-কর্মীদের গাড়ি। কিছু জায়গায় দাঁড়িয়ে কর্মীরা। শেষ দেখা দেখবেন তাঁদের 'বুদ্ধবাবু'কে।
হেদুয়া পার্ক মানিকতলায় বাড়ি অঞ্জনবাবুর। ২০০৯ থেকে মরদেহ বহনের কাজ করেন। বুদ্ধবাবুর মতো মহীরুহের শবদেহ বহনের অভিজ্ঞতা প্রথম। তাঁর গাড়ি চালক সংস্থার ৩ জন চালক থাকলেও আচমকা বৃহস্পতিবার এই দায়িত্ব পড়ে অঞ্জনের কাঁধে। বৃহস্পতিবার থেকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শববাহী গাড়ির চালক তিনি। এদিনও সেই গুরুদায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: আবেগের অভিঘাতে স্বেচ্ছাবন্দি! বুদ্ধবাবুর স্মৃতিচারণায় কুণাল ঘোষ]
অভিজ্ঞতা কেমন জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন ,"এই অভিজ্ঞতা প্রথম। তবে ভয় পাইনি। কিন্তু এত বড় মানুষ, এই কাজ আমাকে করতে হবে জেনে অবাক লাগছিল। বিস্মিত হয়েছি। অন্যরকম লাগছিল। শেষ যাত্রায় যুক্ত থাকতে পেরে আমি গর্বিত। ভালো মানুষ উনি। যতটা দেখেছি, বুঝেছি, নিপাট ভালো মানুষ। তাঁর তুলনা হয় না।"
পিস রুম থেকে বিধানসভায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর দেহ। সকাল ১১টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বিধানসভায় মরদেহ থাকবে। সেখান থেকে বেলা ১২টা নাগাদ দেহ নিয়ে যাওয়া হবে সিপিএমের রাজ্য দপ্তর আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে। সেখানেই মরদেহ শায়িত থাকবে বিকাল ৩টে পর্যন্ত। সেখান থেকে প্রয়াত বুদ্ধদেবের দেহ নিয়ে যাওয়া হবে সিপিএমের ছাত্র ও যুব সংগঠনের রাজ্য দপ্তর দীনেশ মজুমদার ভবনে। পৌনে ৪টে পর্যন্ত বুদ্ধদেবের দেহ শায়িত থাকবে সেখানে। সেখান থেকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পরে মিছিল করে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে শিয়ালদহের এনআরএস হাসপাতালে। সেখানেই বুদ্ধদেবের দেহ দান করা হবে ভবিষ্যতের চিকিৎসার গবেষণার কাজে।