সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বুলডোজার দিয়ে বাড়ি ভেঙে ফেলা সম্পূর্ণ বেআইনি, এমনই মন্তব্য করলেন এলাহাবাদ হাই কোর্টের (Allahabad High Court) অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি গোবিন্দ মাথুর। রবিবার উত্তরপ্রদেশের (Utar Pradesh) প্রয়াগরাজ অঞ্চলে মহম্মদ জাভেদ নামে এক ব্যক্তির বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়। তার আগে বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার জন্য জাভেদকে নোটিস পাঠানো হয়েছিল। তা সত্ত্বেও এই ঘটনা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
হজরত মহম্মদকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন বিজেপির বহিষ্কৃত নেত্রী নূপুর শর্মা (Nupur Sharma)। তাঁর মন্তব্যের পর থেকেই বিক্ষোভের আগুন জ্বলেছিল দেশে। তার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন স্থানে গত কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ চলছে সংখ্যালঘুদের। এদের মধ্যে প্রয়াগরাজের বাসিন্দা মহম্মদ জাভেদ আহমদ ছিলেন এই প্রতিবাদ মিছিলের অন্যতম মুখ। এরপরই সরকারের পক্ষ থেকে জাভেদের বাড়ি ভেঙে ফেলার নোটিস পাঠায় কানপুর ডেভেলপমেন্ট অথরিটি। বাড়িটি অবৈধভাবে নির্মিত বলে উল্লেখ করা হয় নোটিসে। রবিবার শেষমেশ বুলডোজার ( Bulldozer Raze) দিয়ে বাড়িটি ভেঙে দেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন:ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলা: কংগ্রেস কর্মীদের বিক্ষোভের মাঝেই ইডি দপ্তরে হাজির রাহুল গান্ধী]
এই প্রসঙ্গে এলাহাবাদ হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি গোবিন্দ মাথুর বলেছেন, ভারতে বেআইনিভাবে নির্মিত বাড়ির সংখ্যা প্রায় কোটির উপরে। পুলিশ হেফাজতে থাকা এক ব্যক্তির বাড়ি এভাবে ভেঙে ফেলা সম্পূর্ণ অনৈতিক। প্রাক্তন বিচারপতি মাথুরের মন্তব্য, রাজ্য সরকার তাহলে আইনের শাসন মানছে কিনা, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠে যায়।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে (CAA) বিরোধিতায় যারা অভিযুক্ত হয়েছিলেন, তাদের বাড়িতে ‘নেম অ্যান্ড শেম’ লিখে পোস্টার দেওয়ার নির্দেশ দেয় উত্তরপ্রদেশ সরকার। এর প্রতিবাদে গোবিন্দ মাথুর, সরকারের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেন। তাঁকে সমর্থন জানিয়ে কোর্টের পক্ষ থেকেও এই ঘটনাকে অমানবিক এবং ব্যক্তিস্বাধীনতার পরিপন্থী বলা হয়। বুলডোজার দিয়ে বাড়ি ভেঙে দেওয়ার ক্ষেত্রেও তাঁর মন্তব্যকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশে থানার ভিতরেই বিক্ষোভকারীদের মার, ‘দাঙ্গাবাজদের রিটার্ন গিফট’, টুইট BJP বিধায়কের]
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে, সুপ্রিম কোর্ট দিল্লির জাহাঙ্গিরপুরী এলাকায় উচ্ছেদের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ জারি করেছিল। বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও এবং বিআর গাভাইয়ের বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, অভিযানের আগে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে কিনা তা আগে খতিয়ে দেখা হোক। উল্লেখ্য, মধ্যপ্রদেশের খারগনে ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’ প্রকল্পের টাকায় বাড়ি বানাতে শুরু করেন এক ব্যক্তি। শেষ কিস্তির টাকা ব্যাংকে ঢোকার আগেই সরকার তাঁর বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়।