স্টাফ রিপোর্টার: খোদ রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ! অভিযোগকারিণী আবার রাজভবনেরই অস্থায়ী কর্মী। যা নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। কিন্তু প্রশ্ন হল, শ্লীলতাহানির মতো গুরুতর অভিযোগে কি রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তদন্ত করা যায়? নাকি সাংবিধানিক (Constitution) রক্ষাকবচের আড়ালে এ যাত্রায় তদন্ত প্রক্রিয়া এড়িয়ে যাবেন তিনি?
রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ নিয়ে রাজভবনের অস্থায়ী কর্মী ইতিধ্যেই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। তবে খোদ রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ নিয়ে আপাতত আতান্তরে পুলিশ। কারণ, সংবিধানের ৩৬১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দেশের রাষ্ট্রপতি ও কোনও রাজ্যের রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা যায় না। এই ‘সাংবিধানিক রক্ষাকবচ’ থাকার কারণেই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ওই মহিলা কর্মী হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ জমা দিলেও আপাতত এফআইআর করা যায়নি। পুলিশ আইনি পরামর্শ নিচ্ছে।
[আরও পড়ুন: রাজ্যপাল বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ, হেয়ার স্ট্রিট থানায় নির্যাতিতা]
বস্তুত সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৬১ অনুসারে, মেয়াদ চলাকালীন রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যপালদের বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি পদক্ষেপ করা যায় না। এমনকী কোনও আদালতও যদি রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপালদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে, তাহলেও তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা যাবে না। সর্বোপরি সংবিধানের ওই ধারা অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপালেরা কোনও আদালতকেও জবাবদিহি করতে বাধ্য নয়।
যদিও প্রাক্তন রাজ্যপালরা বলছেন, রাজ্যপালদের মেয়াদ শেষের পর তাঁদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতির অনুমতি নিয়ে মামলা করা যেতে পারে। তাছাড়া মেয়াদ চলাকালীন জমিজমা সংক্রান্ত কোনও দেওয়ানি মামলা করা যেতেই পারে। তবে কোনওভাবেই ফৌজদারি মামলা নয়। তবে এই ধরনের অভিযোগ ওঠার পর রাজ্যপালকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার নজির ভারতের ইতিহাসে রয়েছে। ২০০৯ সালে অন্ধ্রপ্রদেশের তৎকালীন রাজ্যপাল এনডি তিওয়ারির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ উঠেছিল। সেসময় তাঁকে রাজ্যপাল পদ থেকে সরিয়ে দেয় তৎকালীন কংগ্রেস সরকার।
[আরও পড়ুন: জীবনে কোনওদিন দ্বিতীয় হয়নি, মাধ্যমিকে কোন স্থানে হুগলির ‘বিস্ময় বালক’ তপজ্যোতি?]
অন্যদিকে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose) এই ঘটনাকে ‘বানানো বিষয়’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। একইসঙ্গে ওই বিবৃতিতে তিনি ঘটনার নেপথ্যে শাসক দলের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ইঙ্গিতও দিয়েছেন। রাজ্যপালের কাজকে নিন্দা করে বিবৃতি দেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজা প্রমুখ। রাতে পালটা হিসেবে রাজ্যপাল রাজভবনে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন চন্দ্রিমাকে। ঘটনার তদন্তে রাজভবনে পুলিশকে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলেও রাজ্যপাল জানান। চন্দ্রিমার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের পরামর্শ নেওয়ার কথা জানান।