সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগে ছিল ২। এবার হল চার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) ঘোষণা করা নতুন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় বাংলার ১৮ জন সাংসদের মধ্যে জায়গা পেলেন চারজন। আর এই চারজনকেই বাছাই করা হয়েছে সুপরিকল্পিতভাবে চব্বিশের লোকসভার কথা মাথায় রেখে।
জন বারলা: বাংলা ভাগের দাবি জানানো বিতর্কিত সাংসদকে এবার কেন্দ্রে মন্ত্রী করছে BJP। বারলাকে (John Barla) মন্ত্রী করলে দলের বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিকে মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠবে, জেনেও ঝুঁকি নিচ্ছেন মোদি-শাহ। আসলে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা বিশেষ করে তরাই-ডুয়ার্সে চরম জনপ্রিয় বারলা। তাঁর নেতৃত্বেই আলিপুরদুয়ারের সবকটি বিধানসভা জিতেছে বিজেপি। তাছাড়া, উত্তরবঙ্গে বিজেপির আদিবাসী মুখ তিনি। চব্বিশের নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে উনিশের লোকসভা এবং একুশের বিধানসভার ফলাফলের পুনরাবৃত্তি করতে বারলার এই জনপ্রিয়তাকেই কাজে লাগাতে চায় গেরুয়া শিবির। তাছাড়া, বারলা যে বিচ্ছিন্নতাবাদের কথা বলছেন, তার সরাসরি কোনও প্রভাব ভোটবাক্সে পড়বে না বলেই মনে করছে বিজেপি।
নিশীথ প্রামাণিক: গত লোকসভা নির্বাচন থেকেই উত্তরবঙ্গে ভাল ফল করে আসছে বিজেপি। এবারের বিধানসভাতেও নিশীথের জেলা কোচবিহার-সহ গোটা উত্তরবঙ্গে রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তের তুলনায় গেরুয়া শিবির ভাল ফল করেছে। তাই নিশীথ প্রমাণিককে (Nisith Pramanik) এর পুরস্কার দিলেন মোদি-শাহরা। আসলে লোকসভায় বাংলা থেকে উনিশের ফলাফলের পুনরাবৃত্তির জন্য উত্তরবঙ্গে ভাল ফল করাটা বিজেপির জন্য বিশেষ জরুরি। সেকারণেই উত্তর থেকে জোড়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করা হচ্ছে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।
শান্তনু ঠাকুর: বিধানসভা ভোটে উত্তর ২৪ পরগনা-সহ গোটা রাজ্যে খারাপ ফল করলেও মতুয়া অধ্যুষিত বেশ কয়েকটি আসন ধরে রাখতে পেরেছে বিজেপি। মতুয়া অধ্যুষিত নদিয়ার আসনগুলির বেশিরভাগও গিয়েছে বিজেপির দখলেই। ২০২৪ লোকসভার আগেও মতুয়া ভোট বিজেপির জন্য জরুরি। কারণ, রাজ্যের অন্তত ৩ থেকে ৫ কেন্দ্রে মতুয়াদের প্রভাব রয়েছে। সম্ভবত সেকারণেই মতুয়াদের প্রতিনিধি হিসেবে শান্তনু ঠাকুরকে (Shantanu Thakur) কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় জায়গা দেওয়া হল। মতুয়াদের মধ্যে শান্তনুকে মন্ত্রী করার দাবি অনেক দিন আগে থেকেই উঠছিল। সেটাই এবার পূরণ করল বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।
ডাঃ সুভাষ সরকার: রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল তথা জঙ্গলমহলে উনিশের লোকসভা ভোটের আগে ভালই প্রভাব বিস্তার করেছিল বিজেপি। কিন্তু একুশের মমতা ঝড়ে কার্যত এলোমলো হয়ে যায় গেরুয়া সংগঠন। জঙ্গলমহলের কর্মীদের চাঙ্গা করতে এবার পশ্চিমাঞ্চলের প্রতিনিধি হিসেবে সুভাষ সরকারকে (Subhas Sarkar) মন্ত্রিসভায় জায়গা দিল বিজেপি। সংঘের ঘনিষ্ঠ লোক হওয়ার পাশাপাশি জনসেবার জন্যও জঙ্গলমহলে বেশ নামডাক আছে সুভাষবাবুর। তাঁর হাত ধরেই জঙ্গলমহলে উনিশের ফলাফলের পুনরাবৃত্তি চাইছে বিজেপি।