গোবিন্দ রায়: সন্দেশখালির ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করল কলকাতা হাই কোর্ট। সেখানকার পরিস্থিতি দেখে ‘বিচলিত’ বিচারপতি। ইতিমধ্যে আদালত বান্ধব নিয়োগ করেছেন তিনি। রাজ্যের কাছে রিপোর্টও চেয়েছে হাই কোর্ট। মামলার পরবর্তী শুনানি ২০ ফেব্রুয়ারি।
মঙ্গলবার বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায় তাঁর রায়ে উল্লেখ করেন, সন্দেশখালির দুটি বিষয় নিয়ে তিনি বিচলিত। প্রথমত, আদিবাসীদের জমি দখল করার অভিযোগ। দ্বিতীয়ত, সেখানকার মহিলাদের মাথায় বন্দুকের নল ঠেকিয়ে ধর্ষণের মতো গুরুতর অভিযোগ। এই ঘটনায় আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়কে আদালত বান্ধব হিসেবে নিয়োগ করেছে আদালত। রাজ্যের পিপি দেবাশিস রায়কে আগামী শুনানিতে এ ব্যাপারে রিপোর্ট আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছে।
[আরও পড়ুন: আবু ধাবি সফরে মোদি, প্রধানমন্ত্রীর ‘বিকশিত ভারতের’ কথা শুনবেন হাজার হাজার প্রবাসী]
শাহজাহান শেখের বাড়িতে ইডি তল্লাশিকে কেন্দ্র করে অশান্তির সূত্রপাত। দীর্ঘদিন ধরে সংবাদ শিরোনামে সন্দেশখালি। গত তিনদিন ধরে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। লাঠি, ঝাঁটা হাতে রাস্তায় নেমেছেন শাহজাহান ও তাঁর সাগরেদদের গ্রেপ্তারির দাবিতে। একের পর এক পোলট্রি ফার্মে আগুন ধরিয়ে দেন উত্তেজিত জনতা। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে পড়ে যে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা। সংবাদমাধ্যমের সামনে সেখানকার মহিলারা সরব হয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, দিনের পর দিন তাঁর উপর অকথ্য অত্যাচার চালানো হয়েছে। শাহজাহানের দাপটের কাছে মুখ খোলার সাহস ছিল না কারও। ফলে বাধ্য হয়েছেন মেনে নিতে। শেখ শাহজাহান বেপাত্তা হওয়ার পরও এলাকায় দাপট দেখাচ্ছিল তাঁর শাগরেদরা। অবশেষে বাঁধ ভেঙেছে সহ্যের। তৃণমূল নেতাদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন এলাকার মহিলারা। তাঁদের অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে দরজার ধাক্কা দেওয়া হত। বাড়ির মহিলাদের তৃণমূলের কার্যালয়ে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হত দিনের পর দিন। পুলিশের দ্বারস্থ হয়েও লাভ মিলত না বলেই অভিযোগ। এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। রাজ্যপালের পায়ে ধরে সুবিচার চেয়েছেন সন্দেশখালির নির্যাতিতারা। এবার বিষয়টি নিয়ে সক্রিয় হাই কোর্টও।