রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: আগামী সপ্তাহে শুরু হচ্ছে বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন। তার আগে রীতি মেনে শেষ কর্মদিবসে সর্বদলীয় বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই চিঠি পেয়েও শুক্রবার সর্বদলীয় বৈঠক অংশ নিতে এলেন না বিরোধীরা। শাসকদলের সদস্যদের নিয়েই বৈঠক সারলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৫ থেকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দফায় কী কী নিয়ে আলোচনা হতে চলেছে, তার রূপরেখা দিলেন স্পিকার। এই তালিকায় প্রাইভেট মেম্বার বিল-সহ একাধিক বিল রয়েছে বলে খবর। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হতে চলেছে, দমদম বিমানবন্দর থেকে ইউরোপের দেশগুলিতে বিমান পরিষেবা সংক্রান্ত আলোচনা। এই মুহূর্তে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিমান চলাচল হলেও ইউরোপের দেশগুলিতে সরাসরি কোনও উড়ান নেই দমদম থেকে। ফলে মুম্বই বা দিল্লির মতো শহর থেকে ট্রানজিট পথে ইউরোপ যেতে হয় কলকাতাবাসীকে। সেই সমস্যা মেটানোর উদ্দেশে বিধানসভায় আলোচনার তৎপরতা। স্পিকার নিজেই জানিয়েছেন, এই আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
শুক্রবার প্রাইভেট মেম্বার বিল নিয়ে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ''আমার জমানায় এই প্রথম প্রাইভেট মেম্বার বিল এসেছে। তা এনেছেন বিরোধী দলের মুখ্য সচেতক শংকর ঘোষ।'' কীভাবে এই বিলটি বিধানসভায় আসতে পারে? তা জানাতে গিয়ে স্পিকার বলেন, ইতিমধ্যে বিলের খসড়া বিধানসভায় জমা দিয়েছেন শংকর ঘোষ। এর পর তা যাবে আইন বিভাগের কাছে। সেখান থেকে যাবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। এক্ষেত্রে সরকারের বিবেচনায় থাকে অতীতে এই সংক্রান্ত কোনও বিল আনা হয়েছে কিনা। সরকারের আইন আছে কিনা। পর পর ধাপ পেরিয়ে ছাড়পত্র মিললে তবেই বিধানসভার অধিবেশনে এই বিল আসবে। তার পর তা পাশ হলে যাবে রাজ্যপালের কাছে। তিনি চূড়ান্ত স্বাক্ষর করবেন। তৃণমূল জমানায় এই প্রথম প্রাইভেট মেম্বার বিল আসতে চলেছে। এছাড়া ২৬ নভেম্বর, সংবিধান দিবস নিয়ে দুদিন ধরে আলোচনা হওয়ার কথা।
এছাড়া শৈশব সুরক্ষা সংক্রান্ত বিল ও ওয়াকফ বিল নিয়েও আলোচনা হতে চলেছে বিধানসভার আসন্ন অধিবেশনে। ২৩ তারিখ রাজ্যের ছটি বিধানসভা উপনির্বাচনের ফলপ্রকাশ। আরও ৬ নতুন বিধায়ক পেতে চলেছে রাজ্যবাসী। তাঁদের শপথগ্রহণ নিয়ে আলোচনা হতে পারে অধিবেশনে। অন্য কোনও জট তৈরি না হলে চলতি অধিবেশনেই নতুন বিধায়কদের শপথ হওয়ার সম্ভাবনা। অতীতে এই শপথ অনুষ্ঠান নিয়ে রাজভবনের সঙ্গে মতানৈক্য হয়েছিল। তবে সেই জটিলতা কেটেও গিয়েছে, জানালেন স্পিকার। এদিকে অধিবেশন চলাকালীন বিরোধী দলের ওয়াক আউট করা প্রায় নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা নিয়ে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ''ওয়াকআউট করার অধিকার আছে বিরোধীদের। তবে সাংবাদিকদের ওই সময় দল বেঁধে বেরিয়ে যাওয়াও দৃষ্টিকটূ। আমি চাইলে আটকাতে পারি। কিন্তু আপনারা গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ, তাই আপনাদের অধিকার খণ্ডন করি না।''