শুভঙ্কর বসু: অবশেষে করোনা কালে শর্তসাপেক্ষে গঙ্গাসাগর মেলার ছাড়পত্র দিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং স্বাস্থ্য অধিকর্তার রিপোর্টে সন্তুষ্ট প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। সেই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই মিলল মেলা এবং স্নানের শর্তসাপেক্ষে অনুমতি। আদালতের রায়ে খুশি অগণিত পুণ্যার্থী।
গত ৪ জানুয়ারি গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন অজয় দে। গঙ্গাসাগর মেলা চত্বরকে কনটেনমেন্ট জোন (Containment Zone) ঘোষণার পাশাপাশি ভিড় নিয়ন্ত্রণে গাইডলাইন জারির আরজি জানান তিনি। যেহেতু গঙ্গাসাগরে একসঙ্গে বহু পুণ্যার্থী স্নান করবেন, তাই মামলার শুনানিতে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে কলকাতা হাই কোর্ট। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, করোনা ভাইরাস মানুষের মুখ ও নাক নিঃসৃত ড্রপলেটের মাধ্যমে ছড়ায়। অনেক মানুষ একসঙ্গে স্নান করতে সাগরে নামলে নাক ও মুখ নিঃসৃত ড্রপলেট সহজেই জলে মিশে যাবে। আর তার ফলে একসঙ্গে বহু মানুষ সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হবে। তাছাড়া বাতাসেও ড্রপলেট ছড়াতে পারে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে রিপোর্ট জমা দেয় রাজ্য। রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং স্বাস্থ্য অধিকর্তার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, যেহেতু সাগরের জল বহমান। তাই ড্রপলেটের মাধ্যমে করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা তুলনায় অনেকটাই কম।
[আরও পড়ুন: মানিকতলার ব্যাটারি কারখানায় বিধ্বংসী আগুন, বিপুল ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা]
সেই রিপোর্টে সন্তুষ্ট হয় কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। তারই পরিপ্রেক্ষিতে শর্তসাপেক্ষে গঙ্গাসাগর মেলায় ছাড়পত্র দিল আদালত। শর্তগুলি কী? হাই কোর্ট জানিয়েছে, ই-স্নানের উপর বেশি করে জোর দিতে হবে। যাঁরা সাগরে পৌঁছেও ই-স্নান করবেন তাঁদের বিনামূল্যে কিট দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। তবে যাঁরা বাড়িতে বসে ই-স্নানের কিট নিতে আগ্রহী তাঁদের থেকে শুধুমাত্র পরিবহণ খরচ ছাড়া অন্য কোনও টাকা নেওয়া যাবে না। অতিরিক্ত সংখ্যক পুণ্যার্থী যাতে একসঙ্গে জলে না নামতে পারেন, সেদিকেও নজর রাখতে হবে। এছাড়াও সকলে করোনা সম্পর্কিত স্বাস্থ্যবিধি আদৌ মানছেন কিনা, সে বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে। করোনা পরিস্থিতিতে গঙ্গাসাগর মেলাকে (Gangasagar Mela) সামাল দেওয়াই এখন রাজ্য সরকারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।