গোবিন্দ রায়: হাই কোর্টের নির্দেশে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের নতুন প্যানেল প্রকাশ করতে চলেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। শুক্রবার প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত এক মামলায় ৩৯ জন চাকরিপ্রার্থীকে নিয়োগে জন্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে নতুন প্যানেল প্রকাশ করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা জানিয়েছেন, পর্ষদকে নতুন প্যানেল প্রকাশ করে ৩৯ জন প্রার্থীকে নিয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, আদালতের এই নির্দেশের পর জোর আলোচনা শুরু প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দপ্তরে।
মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানান, ২০২২ সালে প্রাথমিক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন যাঁরা, তাঁদের ডিএলএড, বিএড দুরকম প্রশিক্ষণই নিয়েছিলেন। তাঁদের দাবি, প্রত্যেকেই বিএড ও ডিএলএড, উভয় ডিগ্রিধারী। এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার সময় তাঁরা প্রথমে বিএড ডিগ্রি দেখিয়েছিলেন, কারণ তাঁদের বিএডে প্রাপ্ত নম্বর বেশি ছিল। প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগে বিএড উত্তীর্ণ প্রার্থীরা যে আবেদন করতে পারবেন, না তা আগে নির্ধারিত নিয়মে ছিল না।” সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট এক নির্দেশে জানায়, বিএড ডিগ্রিধারীরা প্রাথমিক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবে না। এই অবস্থায় বিএডে প্রাপ্ত নম্বরের পরিবর্তে তাঁরা ডিএলএড ডিগ্রি দেখাতে চেয়ে আবেদন করেন। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ তা মানতে চায়নি।
[আরও পড়ুন: আমেরিকায় খুন বীরভূমের নৃত্যশিল্পী অমরনাথ ঘোষ! রহস্যময় ফোন পেয়ে থানায় ছুটল পরিবার]
এদিন সেই মামলাতেই বিচারপতি মান্থার নির্দেশ, ৩৯ জন প্রার্থীর ডিএলএড প্রশিক্ষণের শংসাপত্র আগে যাচাই করতে হবে। তাঁরা পাশ করেছেন কি না, দেখতে হবে। যদি দেখা যায়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৈরি প্যানেলের অন্তর্ভুক্ত প্রার্থীদের থেকে মামলকারীরা বেশি নম্বর পেয়েছেন, তা হলে এঁদের জন্য আলাদা প্যানেল করতে হবে। সেই মতো নিয়োগ করবে পর্ষদ। আদালত আরও জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে যে প্যানেল প্রকাশ করা হয়েছে, তা স্পর্শ করা যাবে না। তবে এই ডিএলএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রার্থীদের জন্য নতুন প্যানেল তৈরি করতে হবে।
এর আগে এই সংক্রান্ত মামলায় হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ২০২২ সালের প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। সেই স্থগিতাদেশ তুলে সুপ্রিম কোর্ট প্রায় ১২ হাজার প্রার্থীর মেধাতালিকা প্রকাশের নির্দেশ দেয়। সেই মতো ১১ হাজার ৭৫৮টি শূন্যপদের মধ্যে ৯ হাজার ৫৩৩ পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রার্থীদের প্যানেল প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। তার পরও ১২ জন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁদের পর এবার ডিএলএড প্রশিক্ষিত আরও ৩৯ জন আলাদা করে মামলা করেন আদালতে। তাঁদের ক্ষেত্রেই আলাদা প্যানেল প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।