শুভঙ্কর বসু: গর্ভপাত নিয়ে নজিরবিহীন নির্দেশ কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court)। প্রসূতি এবং গর্ভস্থ ভ্রূণের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে ৩৫ সপ্তাহে গর্ভপাতের অনুমতি দিল আদালত। তবে গর্ভপাতের ফলে প্রসূতির শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে তার দায় নেবে না হাই কোর্ট।
উত্তর কলকাতার এক প্রসূতি দিনকয়েক আগে রাজ্য সরকারের কাছে গর্ভপাতের (Abortion) আবেদন জানান। আবেদনপত্রে ওই গর্ভবতী মহিলা উল্লেখ করেন, বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকের পরামর্শে চলছেন। তবে সম্প্রতি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানা যায়, তাঁর গর্ভস্থ ভ্রূণের স্পাইনাল কর্ডে সমস্যা রয়েছে। প্রসূতিরও শারীরিক অবস্থা ভাল নয়। সন্তান জন্মালে সদ্যোজাত এবং প্রসূতির শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে। শুধু তা নয়। দু’জনের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। সে কারণেই তিনি গর্ভপাতের আরজি জানান।
[আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর সফরের ডিউটি সেরে ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পুলিশের গাড়ি, জখম ১০]
তবে ২৪ সপ্তাহের পর গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়া কার্যত অসম্ভব। সে কারণে তাঁকে গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ওই প্রসূতি। বৃহস্পতিবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থারের এজলাসে মামলার শুনানি হয়। বিচারপতি প্রসূতিকে প্রশ্ন করেন, তিনি সত্যিই গর্ভপাত করাতে চান কিনা? উত্তরে প্রসূতি জানান শারীরিক অসুস্থতার কথা মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রসূতির আইনজীবী সুতপা সান্যাল জানান, দীর্ঘদিন সন্তানের পরিকল্পনা করেছিলেন মহিলা। তবে কিছু শারীরিক সমস্যার কারণে তা সম্ভব হচ্ছিল না। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সবরকম ব্যবস্থার পর অন্তঃসত্ত্বা হন। তবে গর্ভধারণ করার পর থেকেই অসুস্থতা বাড়তে থাকে প্রসূতির। গর্ভস্থ ভ্রূণের শারীরিক অবস্থাও ভাল নয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে শারীরিক সমস্যা হতে পারে দু’জনেরই। তাই আদালতের থেকে গর্ভপাতের অনুমতি চান ওই মহিলা।
হাই কোর্টের গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়া হয়। সম্ভবত এই প্রথম ৩৫ সপ্তাহে গর্ভপাতের অনুমতি দিল কলকাতা হাই কোর্ট। আদালতের তরফে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, ৩৫ সপ্তাহে গর্ভপাত করানোর ফলে অন্তঃসত্ত্বার কোনও ক্ষতি হলে তার দায় নিতে হবে মামলাকারীকেই। এই মর্মে রাজ্য সরকারের আইনজীবী অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, হাই কোর্ট বুঝেছে বলেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।