সুদীপ রায়চৌধুরী: সমবায় নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে মামলা করতে গিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মুখ পুড়ল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। এ প্রসঙ্গে আদালতের বক্তব্য, এবিষয়ে মামলা করার অধিকারই নেই শুভেন্দুর। তাঁর আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
হলদিয়ায় বিদ্যাসাগর কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে নিয়োগ প্যানেল নিয়ে প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করার আবেদন জানিয়েছিলেন শুভেন্দু। ওই সমবায়ের প্রাক্তন চেয়ারম্যান শুভেন্দুর অভিযোগ ছিল, ওই নিয়োগ প্যানেলে দুর্নীতি হয়েছে। প্যানেলের বাইরে বেশ কিছু প্রার্থী ছিল, তাঁদের অবৈধ ভাবে চাকরি দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি সেটা জানতেন না বলে দাবি করেন তিনি।
বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহরায়ের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি ওঠে বৃহস্পতিবার। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে, শুভেন্দু যেখানে নিজে নিয়োগে অংশগ্রহণকারী ছিলেন না, সেখানে কিভাবে মামলা করলেন কী ভাবে। এ বিষয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ, হলদিয়া বিদ্যাসাগর সমবায় ব্যাঙ্কের ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিরোধী দলনেতা অংশই নেননি। তাই বিষয়টি নিয়ে মামলা করার এক্তিয়ারও তাঁর নেই।
[আরও পড়ুন: ষষ্ঠীর ভোরে অঘটন, সার্ভিস রিভলবার থেকে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা পুলিশকর্মীর]
অন্য একটি মামলায় অবশ্য বৃহস্পতিবার কিছুটা স্বস্তি পান বিরোধী দলনেতা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং কাণ্ডের প্রতিবাদে গেরুয়া শিবিরের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল শুভেন্দু বিরুদ্ধে। যা নিয়ে এফআইআর দায়ের করতে চেয়েছিল পুলিশ। সেই আবেদন এদিন খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
তবে সেদিন শুভেন্দুর মুখের ভাষা নিয়ে আপত্তি প্রকাশ করে আদালত বলেছে, এই ভাষা জনপ্রতিনিধিসুলভ নয়। সম্প্রতি র্যাগিং কাণ্ডে যাদবপুরে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশকর্মীদের সঙ্গে বিরোধ বাঁধে শুভেন্দুর। তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয় যাদবপুর থানার পুলিশ।
এদিন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের আদালতে মামলাটি উঠলে আদালত পুলিশের আবেদন খারিজ করে দেয়। এ প্রসঙ্গে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, বিরোধী দলনেতা যে ভাষা প্রয়োগ করেছেন, তা নির্দিষ্ট কাউকে উদ্দেশ করে নয়। কাউকে আঘাত করছে না। এর প্রেক্ষিতে ফৌজদারি ধারা প্রয়োগ করা যায় না।
তবে জনপ্রতিনিধিদের এই ধরনের ভাষা প্রয়োগ থেকে বিরত থাকা উচিত বলেও মনে করে আদালতের বক্তব্য, এর ফলে মানুষের মনে ওই পদের প্রতি বিরূপ মনোভাব তৈরি হতে পারে। এফআইআর দায়ের করার আবেদন খারিজ হলেও শুভেন্দর বিরুদ্ধে অন্য মামলাগুলি চলবে। সেই তদন্তে শুভেন্দুকে সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে। আগামী ১৭ ও ১৮ নভেম্বর এই মামলাগুলির পরবর্তী শুনানি।