অর্ণব আইচ এবং রাহুল রায়: নবান্ন অভিযানকে কেন্দ্র করে বিজেপি-পুলিশের খণ্ডযুদ্ধ নিয়ে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবের রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। আগামী সোমবার এনিয়ে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি, রাজ্য সরকারকে বিজেপির পার্টি অফিসের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়াও কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কাউকে অপ্রয়োজনীয় ভাবে গ্রেপ্তার বা আটক করে রাখা চলবে না বলে জানিয়েছে আদালত।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা যেমন বেআইনি ও অসংবিধানিক এবং সেই সম্পত্তি নষ্ট করা যাবে না, ঠিক তেমনি অকারণে কাউকে গ্রেপ্তার করা যায় না। মঙ্গলবার বিজেপির নবান্ন অভিযানকে (BJP Nabanna Avijan) কেন্দ্র করে হাওড়া ও কলকাতা উত্তাল হয়। বিকেলেই হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বিজেপিপন্থী আইনজীবীরা। পরে মামলা দায়ের হলে বিকেলে আদালতের নির্দিষ্ট সময়ের পরে ফের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই আবেদনটির শুনানি হয়। তারপরই এই তিনটি নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট।
[আরও পড়ুন: সিবিআই নয়, কল্যাণী এইমসে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করবে সিআইডিই, জানাল হাই কোর্ট]
প্রসঙ্গত, বিজেপির নবান্ন অভিযানে কলকাতা থেকে গ্রেপ্তার হয় মোট ৯০ জন, যাদের মধ্যে ২২ জন মহিলা। ধৃতদের মধ্যে ছিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী, লকেট চট্টোপাধ্যায়, রাহুল সিনহা। এদিন বিজেপির হামলায় কলকাতায় মোাট ২৭ জন পুলিশ আহত হয়। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মধ্য কলকাতার অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার দেবজিৎ চট্টোপাধ্যায়, জোড়াবাগান থানার অতিরিক্ত ওসি সরফরাজ আহমেদ। মহাত্মা গান্ধী রোড ও সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ে দু’জনকে ঘিরে ধরে লাঠি ও বাঁশ দিয়ে গণধোলাই দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। মহাত্মা গান্ধী রোড ও রবীন্দ্র সরণির সংযোগস্থলের কাছে কলকাতা পুলিশের যে পিসিআর গাড়িতে প্রথমে ভাঙচুর করে জনা বারো বিজেপি কর্মী। আতঙ্কে পুলিশকর্মীরা দূরে সরে গেলে গাড়িতে আগুন লাগায় তিনজন। সিসিটিভি ও ভিডিও ফুটেজে অভিযুক্তদের শনাক্তকরণ করা হচ্ছে। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ে একটি পুলিশের কিয়স্কও ভাঙচুর হয়।
নবান্ন অভিযানে লালবাজারের সামনে ১৪৪ ধারা ভাঙার অভিযোগে হেয়ার স্ট্রিট থানা, পুলিশকে ইট দিয়ে হামলার অভিযোগে বউবাজার থানা, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে বড়বাজার থানা, এসিকে মারধরের অভিযোগে বড়বাজার থানা, অতিরিক্ত ওসিকে মারধরের অভিযোগে জোড়াসাঁকো থানা, হাওড়া ব্রিজের কাছে গোলামালের অভিযোগে উত্তর বন্দর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশ আধিকারিকদের মারধরের ঘটনায় শনাক্তকরণের পর গ্রেপ্তা করা হবে। এত ইট ও পাথর বিজেপি কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে সঙ্গে নিয়ে এসেছিল বলে সন্দেহ পুলিশের। এর তদন্ত চলছে।