গোবিন্দ রায়: বিজেপি লিগাল সেলের আইনজীবীদের ভূমিকায় বিরক্ত কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। আদালত চত্বরে আইনজীবীদের বিরুদ্ধে যে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে, তা মোটেই ভাল চোখে দেখছেন না তিনি। যেখানে সাধারণ মানুষ বিচারের আশায় যায়, সেই আদালত আরও বেশি সুরক্ষিত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। তাঁর প্রশ্ন, “আইনজীবী হয়ে আদালতের কর্মীদের হুমকি কেন?” যে আইনজীবীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অবিলম্বে তাঁদের নামও জানতে চেয়েছেন তিনি। বাড়াবাড়ি করলে লার্জার বেঞ্চে বিষয়টি জানাবেন বলেও বিজেপি আইনজীবী সেলের সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের কড়া হুশিয়ারি দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রেজিস্ট্রার জেনারেলের ঘরে ঢুকে একদল আইনজীবীর অভব্য আচরণ দেখান। কোর্টরুমের মধ্যে মিটিং করার দাবি জানিয়েছেন। তাতে বাধা দিতেই হুমকি দেওয়া হয়, আর তাতেই ওই আইনজীবীরা রেজিস্ট্রার জেনারেলের ব্যক্তিগত সচিব সহ কয়েকজন কর্মীকে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ। বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হয়ে কীভাবে হুমকি দেওয়া যেতে পারে? শুক্রবার তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি।
[আরও পড়ুন: সাতসকালে দেবাংশুর তমলুকের বাড়িতে ‘অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়’, খবর বনদপ্তরে]
আদালতের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ, আদালত চত্বরে কোনও রাজনৈতিক দলের বৈঠক হতে পারে না। প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, “কোর্টের কর্মীরা বিচারপ্রার্থী, আইনজীবীদের জন্য কাজ করেন। তারা যদি অসুরক্ষিত বোধ করেন, আমরা কোথায় যাব ? অভিযুক্তদের দুজনের নাম পেয়েছি। তারা হলেন ফ্লাগুনী বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজেশ শাহ। এদের মধ্যে ফ্লাগুনী বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচিত সদস্য।” প্রধান বিচারপতির কথায়, “মানা যায় না। বারের সদস্যরা হুমিকি কিভাবে দিতে পারে!” এদিন আদালতে উপস্থিত কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল বলেন, “খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমি নিজে বিষয়টি দেখব। কোর্ট চত্ত্বর সুরক্ষিত হওয়া উচিৎ। আদালতের ঘরে মিটিং হতে পারে না।”
প্রধান বিচারপতি বলেন, ” এবার থেকে আদালিত কক্ষগুলি দেড়টায় বন্ধ করে আবার দুটো খুলে দেব। আবার বিকেল পাঁচটায় বন্ধ করে দেব।” একই সঙ্গে, তিনি আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, যারা গেছিলেন তাঁদের সবার নাম চাই রাতের মধ্যে। নাহলে লার্জার বেঞ্চে এই ধরনের একটা মামলা চলছে সেখানে পাঠিয়ে দেব বলে প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন।বিষয়টিতে রাজ্যের এজিকেও নোটিশ দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।