অভিরূপ দাস: ঘেরাও উঠল। সমস্যা মিটল না। নির্বাচনের দাবিতে এবার আমরণ অনশনের পথে হাঁটতে চলেছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারা। যদিও ছাত্রদের এই হঠকারি সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আবেদন জানিয়েছেন হাসাপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান বিধায়ক চিকিৎসক সুদীপ্ত রায়। তিনি জানিয়েছেন, “ছাত্ররা আমার পুত্রসম। ওরা পড়াশোনা করতে এসেছে। মন দিয়ে পড়াশোনা করুক। সময়মতো নিশ্চয়ই নির্বাচন হবে। তার জন্য ঘেরাও অনশনের প্রয়োজন নেই।”
সোমবার দুপুর তিনটে থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে শুরু হয়েছিল ঘেরাও। অধ্যক্ষ ছাড়াও, সুপার, ডেপুটি সুপার, নার্সিং সুপারিটেন্ডেন্ট-সহ চব্বিশজন বিভাগীয় প্রধানকে ঘেরাও করেছিল ডাক্তারি পড়ুয়ারা। ৩৪ ঘন্টা পর বুধবার ভোর রাতে সে ঘেরাও তুলে নেওয়া হয়। ছাত্ররা দাবি করেন, দুপুর দুটোর মধ্যে নির্বাচনের দিন ঘোষণা করতে হবে। সেইমতো বুধবার দুপুরে অধ্যক্ষর ঘরে আসে তারা। দেখা যায় অধ্যক্ষ নেই। বিভাগীয় প্রধানরাও গরহাজির।
এরপরই ছাত্রনেতা অনিকেত কর সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, অনেক আশা নিয়ে অধ্যক্ষকে আবেদন জানিয়েছিলাম। কিন্তু কোথাও সহযোগিতা পাচ্ছি না। ছাত্রদের দাবি, যাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন তাঁদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ছাত্র নেতারা আরও জানিয়েছেন, ঘেরাওয়ের কারণে স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যাহত হয়নি। এর পিছনে চক্র রয়েছে। যাঁদের জন্য ব্যাহত হয়েছিল। তার পিছনে কারা সেটা তদন্ত করতে হবে।
[আরও পড়ুন: ‘সংসদে বিপজ্জনক বিল আসছে, রাজ্যের ক্ষমতা খর্ব হবে’, দিল্লিতে আশঙ্কা মমতার]
সবশেষে ঠিক হয়, যতক্ষণ না নির্বাচনের দিন ঘোষণা হচ্ছে আমরণ অনশনের পথেই হাঁটবে ছাত্ররা। বৃহস্পতিবার সকাল দশটা থেকে অনশনে বসছেন পাঁচজন ছাত্র। এদিকে এই বিষয় একাধিকবার অধ্যক্ষকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন তোলেননি। রাজ্য মেডিক্যাল ইউনিটের কনভেনর ডা. শামস মুসাফির জানিয়েছেন, কলেজ কাউন্সিলই আগে জানিয়েছিল ২২ ডিসেম্বর কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হবে। আকস্মিক তারা জানিয়েছেন, নির্বাচন হবে না। আন্দোলনকে আরও জোরদার করার আবেদন জানিয়েছে রাজ্য মেডিক্যাল ইউনিট।
সংগঠনের দাবি, এমসিডিএসএ বুধবার মধ্যরাতে যেভাবে অবস্থান বিক্ষোভ তুলে নিয়েছে। তা ঠিক হয়নি। এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত আন্দোলনের গণতান্ত্রিক পরিবেশকে ক্ষুণ্ণ করেছে। অন্যদিকে, মেডিক্যাল কলেজে অচলাবস্থার জেরে সমস্যায় জেরবার রোগীরা। পুলিশি নিরাপত্তা চেয়ে মঙ্গলবারই দায়ের করা হয়েছে মামলা। স্বাস্থ্য পরিষেবা যেভাবে ব্যাহত হয়েছে সেটা পুনরায় চালু করা হোক। এই আবেদন নিয়ে বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের এজলাসে এদিন মামলা করার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। তবে ঘেরাও উঠলেও, ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে এখনও অনড় চিকিৎসক পড়ুয়ারা। তাদের দাবি, ২২ ডিসেম্বরেই ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে তার নির্দেশিকা দিতে হবে।